প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে লেকের পানিতে সুগঠিত শরীরে তার সাঁতরে মাছ ধরা কিংবা স্পিডবোট নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর চিত্র দেখে হলিউডি মুভি বলে ভুল করতে পারেন কেউ। তবে বাস্তবেই বর্তমান দুনিয়ার প্রভাবশালী একজন প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিজীবনে এমন অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়তা দেখে যে কেউই হয়তো মুগ্ধ হবেন।
কিছু সময়ের জন্য তাকে পেশাদার সাঁতারুদের মাস্ক পরা অবস্থায়ও দেখা গেছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আরটি’তে প্রকাশিত ওই ফুটেজে দেখা যায়, স্পিডবোট নিয়ে লেকের পানিতে ছুটে চলছেন পুতিন। এক পর্যায়ে স্পিডবোট থেকে নেমে লেকের পানিতে দাঁড়িয়ে তিনি বর্শি দিয়ে মাছ ধরতে শুরু করেন। এরপর বর্শি ও শিকার করা মাছ হাতে তীরে ফেরেন তিনি।
২০০৯ সাল থেকে প্রতিবছরই সাইবেরিয়ায় এমন অবকাশে যান পুতিন। সঙ্গে থাকেন মন্ত্রিপরিষদে থাকা খুব ঘনিষ্ঠ কোনও সদস্য। ইতোপূর্বে প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেবকে নিয়েও সাইবেরিয়ায় অবকাশযাপনে গিয়েছিলেন পুতিন। তবে এবার ১-৩ আগস্ট দুইদিনের সাইবেরিয়া সফরে তার সঙ্গী ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শৈগু।
এপি, দ্য টেলিগ্রাফ, ডেইলি মেইল-এর মতো পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলো অবশ্য বলছে, এখানে পুতিনের অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়তাই অবশ্য সবকিছু নয়। বরং খালি গায়ে এমন ফটোশেসনের মাধ্যমে দেশবাসীকে একটা বার্তা দিতে চান তিনি। আর সেটা হচ্ছে, শারীরিকভাবে তিনি যথেষ্ট ফিট এবং একইসঙ্গে অনেক বেশি কর্মঠ। ফলে তার ওপর আস্থা রাখতে পারেন রুশ নাগরিকরা। একইসঙ্গে দেশটির যেসব নাগরিক বিপুল অর্থ ব্যয়ে বিদেশে অবকাশ কাটাতে যান তাদের পুতিন দেখাতে চান, রোমাঞ্চকর ভ্রমণের জন্য রাশিয়াতেই বহু ভালো সুযোগ রয়েছে। এর জন্য ইউরোপমুখী হওয়া অপরিহার্য নয়।
দুই দিনের সাইবেরিয়া সফরে পাহাড়ি লেকে অ্যাডভেঞ্চার উপভোগের বাইরে বেশকিছু রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানেও অংশ নেন ভ্লাদিমির পুতিন।
এর আগেও বিভিন্ন সময়ে ক্রেনে চড়ে শূন্যে উড্ডয়ন, খালি গায়ে ঘোড়সওয়ার, ক্ষিপ্ত বাঘকে তাড়া করার মতো ঘটনা নিয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন পুতিন।
২০০৯ সালে সাবমেরিনে চেপে গিয়েছিলেন বিশ্বের গভীরতম হ্রদ বৈকালের ১,৪০০ মিটার গভীরে। ২০১৩ সালে আরেকটি ক্ষুদে সাবমেরিনে চেপে তিনি ডুব দেন বাল্টিক সাগরে। নৌবাহিনীর একটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ দেখাই ছিল তার ওই ডুবোসফরের উদ্দেশ্য। সূত্র: আরটি, স্পুটনিক।
/এমপি/এএ/