ব্রিটিশ কোম্পানির ৫ কোটি ডলারের বিলের ফাঁদে যুক্তরাষ্ট্র!

আফগানিস্তানের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিতে মার্কিন সরকারকে সহায়তাকারী একটি ব্রিটিশ কোম্পানির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের এক নিরীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, কোম্পানিটি তাদের খরচ বাবদ ৫ কোটির ডলারেরও বেশি মূল্যের একটি বিল তৈরি করেছে। এরমধ্যে কোম্পানির শীর্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের দেওয়া বিলাসবহুল গাড়ি ও বেতন অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। অথচ ওই কর্মকর্তারা আদৌ কাজ করেছেন কিনা তার কোনও প্রমাণ নেই। বুধবার (৯ আগস্ট) পেন্টাগনের নিরীক্ষা বিভাগ থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান খবরটি জানিয়েছে।  অবশ্য, ব্রিটিশ কোম্পানিটি তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অযথার্থ উল্লেখ করে তা নাকচ করে দিয়েছে। 

ইরাকে একটি বেসরকারি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা
গার্ডিয়ান জানায়, নিউ সেঞ্চুরি কনসাল্টিং (এনসিসি) নামের ওই ব্রিটিশ কোম্পানিটি স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রবাবদ ৪২ হাজার ডলার ব্যয় করেছে। তাছাড়া আগ্নেয়াস্ত্র ক্রয় এবং কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত বেতন ও বোনাসবাবদ ব্যয় ধরেছে এনসিসি। বুধবার (৯ আগস্ট) মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিসের কাছে লেখা এক চিঠিতে মিসৌরির সিনেটর ক্লেয়ার ম্যাককেসকিল নিরীক্ষা বিভাগের তথ্যগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে জানিয়েছেন। ওই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, নিয়ম বহির্ভূতভাবে কর্মকর্তাদেরকে ছয় অংকের পারিশ্রমিক প্রদান করেছে কোম্পানিটি। কর্মকর্তারা যখন বিদেশে থাকবেন তখন তাদেরকে ১০০ ভাগ হারে এবং যখন ছুটিতে থাকবেন তখন ৬০ ভাগ হারে বেতন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কনসালট্যান্টরা যেখানেই থাকুন না কেন তাদেরকে পূর্ণ বেতন দিয়েছে এনসিসি। তাছাড়া বোনাস বাবদ তাদেরকে ৩৩ লাখেরও বেশি ডলার দিয়েছে এনসিসি।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এন্ড গভর্নমেন্টাল অ্যাফেয়ার্স কমিটির সঙ্গে যুক্ত ডেমোক্র্যাট সদস্য ম্যাককেসকিল প্রতিরক্ষা বিভাগের কোন দফতরটি এ কাজ দেখভাল করেছে তা প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন। নিউ সেঞ্চুরি কনসাল্টিং কোম্পানির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা কিংবা ভবিষ্যতে বিতর্কিত এ কোম্পানিকে কাজ দেওয়া হবে কিনা তাও জানতে চেয়েছেন ম্যাককেসকিল।

নিউ সেঞ্চুরি কনসাল্টিং এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল গ্রুনবার্গ অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, এনসিসিকে অস্বচ্ছভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। গ্রুনবার্গের দাবি তার প্রতিষ্ঠান ফেডারেল অধিগ্রহণের বিধি অনুসরণ করেছে। নির্বাহী সহকারীরা অতিরিক্ত পরিমাণে পারিশ্রমিক পেয়েছেন বলে যে অভিযোগ উঠৈছে তাকেও অযথার্থ বলেছেন তিনি।

অবশ্য, এনসিসির সঙ্গে চুক্তিকারী কমান্ড আর্মি কনট্রাক্টিং কমান্ড এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেনি।

২০০৭ সালে ইরাকে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দিতে চুক্তিটি করা হয়। ২০১০ সালে  আফগানিস্তানে কাজগুলো স্থানান্তরিত হয়। এর তিন বছর পর এসিসির সঙ্গে এনসিসির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

/এফইউ/