উ. কোরিয়ার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক হুমকিধামকির এই পর্যায়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ার করলেন, যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র তাক করে রেখেছে। এখন উ. কোরিয়া কোনওভাবে যদি কোনও ভুল সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলেই বিস্ফোরণ ঘটবে। সামরিক অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করে তিনি উ. কোরিয়াকে ওই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। অবশ্য ডোনাল্ড ট্রাম্প ধারাবাহিক যুদ্ধের হুঙ্কার দিলেও তার প্রশাসন যুদ্ধকে ভয়াবহ আকারেই দেখছে। প্রতিরক্ষা দফতর কূটনীতির পথেই উত্তর কোরীয় সংকট সমাধানের ব্যাপারে আশাবাদের কথা জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক টুইটার পোস্টে ট্রাম্প বলেছেন ‘ইউএস লকড অ্যান্ড লোডেড অন এন কোরিয়া’। উল্লেখ্য লকড অ্যান্ড লোডেড একটি সামরিক গালি, যা দিয়ে যুদ্ধাবস্থার সবশেষ প্রস্তুতি বোঝানো হয়ে থাকে। টুইটারে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘সামরিক পথে সংকটের সমাধানের সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।উ. কোরিয়া উল্টাপাল্টা কিছু করলেই হামলা চালানো হবে। আশা করছি কিম জন বিকল্প পথ খুঁজবে’।
Military solutions are now fully in place,locked and loaded,should North Korea act unwisely. Hopefully Kim Jong Un will find another path!
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) August 11, 2017
ট্রাম্প এমন সময় এই হুঁশিয়ারি দিলেন, যখন উ. কোরিয়া তার বিরুদ্ধে কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়ার আভিযোগ তুলেছে।
উ. কোরিয়ার ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষার বিপরীতে মার্কিন প্রস্তাবে সমর্থন দিয়ে জাতিসংঘের নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে পিয়ংইয়ং-ওয়াশিংটন উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। শুরু হয় দু্ই দেশের শীর্ষ নেতার পারস্পরিক হুমকিধামকি। এক পর্যায়ে উ. কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের গুয়ামের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরিকল্পনা ঘোষণা করে। জবাবে দেশটিকে ‘ধূলায় মিশিয়ে দেওয়া’র হুমকি দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিস দাবি করেছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘ দূতের তত্ত্বাবধানে কূটনৈতিক পথেই সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে। ওই প্রচেষ্টা ইতিবাচক পথে এগোচ্ছে বলেও জানিয়েছেন ম্যাটিস। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যেও সংকটের কূটনৈতিক সমাধান প্রচেষ্টার আভাস পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) জেমস ম্যাটিস বলেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে সংঘাতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়াটা তার দায়িত্ব ছিল। তবে তিনি মনে করছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন এবং জাতিসংঘের দূত নিকি হ্যালির তত্ত্বাবধানে পরিচালিত কূটনৈতিক প্রচেষ্টা কূটনৈতিকভাবে ফলপ্রসূ হচ্ছে। ম্যাটিস বললেন, ‘যুদ্ধের ভয়াবহতার ব্যাপারে যথেষ্ঠ ভালো জানাশোনা আছে। এটি যে বিপর্যয় ডেকে আনবে তা বোঝানোর জন্য অন্য কোনও বিশেষণ ব্যবহারের প্রয়োজন নেয়।’
সম্ভাব্য সংঘাত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ম্যাটিস জানান, এ ব্যাপারে তার দেশ প্রস্তুত রয়েছে। তবে তিনি বলেন, ‘আমি আগে থেকে আমার শত্রুপক্ষকে জানিয়ে দেব না যে আমি কী করতে যাচ্ছি।’
জুলাই মাসে দুটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষাকে কারণ দেখিয়ে ৫ জুলাই দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের মার্কিন প্রস্তাবে সম্মত হয় নিরাপত্তা পরিষদ। উ. কোরিয়া দাবি করেছে, নিষেধাজ্ঞার কারণে সরকারের ৩ বিলিয়ন বার্ষিক রফতানির এক তৃতীয়াংশ কমে যাবে।
/এফইউ/বিএ/