রোহিঙ্গা প্রশ্নে মিয়ানমারের পক্ষেই থাকবে ভারত: মোদি

রাখাইন রাজ্যের সহিসংতায় মিয়ানমারের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে ভারত।  সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা নিয়ে মিয়ানমারের উদ্বেগ আমলে নিয়েছে দিল্লি। জবাবে মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো সরকারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সু চি মিয়ানমারের সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপে সমর্থন দেওয়ায় ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
মোদি-সু চি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি দুই দিনের সরকারি সফরে মিয়ানমারে রয়েছেন। বুধবার রাজধানী নেইপিদোর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকের পর দুই নেতা যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন। সে সময় মোদি বলেন, ‘যখন দেশটি একটি শান্তি প্র্রক্রিয়ায় আসছে অথবা সমস্যা সমাধানের পথে আছে, তখন আমরা চাই মিয়ানমারের ঐক্য ও সার্বভৌমত্বের জন্য সব পক্ষ একসঙ্গে কাজ করবে।’

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী এমন সময় মিয়ানমার সফর করছেন, যখন রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ সহিংসতা চলছে। দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ও উগ্র জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধরা রোহিঙ্গাদের বসতবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে, লুটতরাজ চালাচ্ছে। পথে-প্রান্তরে, নদীতে পাওয়া যাচ্ছে রোহিঙ্গাদের লাশ। প্রাণ বাঁচাতে এরই মধ্যে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গার সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে।

২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাবিরোধী সহিংসতা শুরুর পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে মিয়ানমার। বিশেষ করে অং সান সু চির বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। কিন্তু মোদি যেভাবে সু চি ও মিয়ানমার সরকারের সাফাই গাইলেন, তাতে আন্তর্জাতিক চাপের ঝাঁঝ কমে যাওয়ায়ই স্বাভাবিক।

রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে চলমান জাতিগত নিধনযজ্ঞের ব্যাপারে কোনও অবস্থান নেননি মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় প্রতিবেশী ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি। নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়েও কোনো আহ্বান রাখেননি মোদি। তিনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সঙ্গে যুথবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি মিয়ানমারের উন্নয়নে হাত বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন- বলেছেন, মিয়ানমার যেসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তা মোকাবিলায় ভারত পাশে থাকবে।

দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন মোদি ও সু চি। প্রধানমন্ত্রী পদমর্যাদায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় পরামর্শক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী নোবেলজয়ী সু চি বলেছেন, ভারত ও মিয়ানমার একসঙ্গে নিশ্চিত করতে পারে, যেন কারো মাটিতে সন্ত্রাসীরা শেকড় গাঁড়তে না পারে।