কুর্দিস্তানের স্বাধীনতা প্রশ্নে গণভোট নিয়ে সংশয়

nonameইরাকি কুর্দিস্তানের স্বাধীনতা প্রশ্নে গণভোট নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর এ গণভোট অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শনিবার কুর্দিস্তান স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাসুদ বারজানি’র এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। কুর্দিস্তান স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংবাদ সম্মেলনটি রবিবার অনুষ্ঠিত হবে। এর স্থান ও সুনির্দিষ্ট সময় পরে জানিয়ে দেওয়া হবে। বিবৃতিতে সংবাদ সম্মেলন পেছানোর কারণ সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর মাধ্যমে এই গণভোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার দিকটিই আবারও সামনে চলে এসেছে। 

ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকার এই গণভোটের বিরোধিতা করছে। তুরস্ক ও ইরানের মতো প্রভাবশালী আঞ্চলিক দেশগুলোও এর ঘোর বিরোধী। তবে এ গণভোটের ব্যাপারে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর আশঙ্কা, ইরাকি কুর্দিস্তান স্বাধীন হলে এটি মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি নতুন ইসরায়েলের জন্ম দেবে।

কুর্দিস্তানের রাজধানী আরবিলে শুক্রবার এক বিশাল সমাবেশে গণভোট নিয়ে কথা বলেন মাসুদ বারজানি। তিনি বলেন, ‘এই গণভোট আমার হাতে নয়। এটা রাজনৈতিক দলগুলোর হাতেও নয়। এটা আপনাদের হাতে।’

noname

ইরাক থেকে কুর্দিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য গণভোট আয়োজনের তীব্র সমালোচনা করেছে তুরস্ক। দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, কুর্দিস্তান যদি বিচ্ছিন্নতার জন্য গণভোটের আয়োজন করে তাহলে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে আঙ্কারা।

এ গণভোট অনুষ্ঠিত হলে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা নিয়ে আলোচনা করেছে দেশটির মন্ত্রিসভা। বৈঠক শেষে তুরস্কের উপপ্রধানমন্ত্রী বাকির বোজদাগ বলেন, সম্ভাব্য গণভোট নিয়ে তুরস্ক উদ্বিগ্ন। এ গণভোট স্থগিত করার সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এটা পুরোপুরি বাতিল করতে হবে; যেন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে না হয়। অন্যথায় এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সব পথ আমাদের জন্য খোলা রয়েছে।

ইরাকের ভাইস প্রেসিডেন্ট নুরি আল মালিকি বলেছেন, কুর্দিস্তান নামের কোনও দ্বিতীয় ইসরায়েলের অস্তিত্ব মেনে নেওয়া হবে না। গণভোট থেকে সরে আসতে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস-ও কুর্দিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর কুর্দিস্তানের স্বাধীনতা নিয়ে প্রস্তাবিত গণভোট প্রত্যাখ্যান করে ইরাকের পার্লামেন্ট। পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত ভোটাভুটিতে গণভোটের বিরুদ্ধে ভোট দেন দেশটির অধিকাংশ এমপি। এ সময় প্রতিবাদে আসন ছেড়ে বেরিয়ে যান কুর্দিস্তানের এমপিরা।

ইরাকের স্পিকার সালিম আল-জাবুরি বলেন, এ ভোটের মাধ্যমে সরকারকে একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। আর তা হচ্ছে, দেশের সংহতি ধরে রাখতে সরকারকে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। কুর্দি নেতাদের সঙ্গে আন্তরিক আলোচনা শুরু করতে হবে।

সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড, রয়টার্স।