রাখাইনে নতুন ‘হিন্দু গণকবর’, আরও ১৭ মরদেহের সন্ধান

সন্ধান পাওয়া এক নতুন গণকবরে আরও ১৭ জন হিন্দু রোহিঙ্গার মরদেহ পাওয়ার দাবি করেছে মিয়ানমার সরকার। রবিবার গণকবরে ২৮ মরদেহের সন্ধান পাওয়ার পরদিন সরকারের একজন মুখপাত্র নতুন করে মরদেহগুলো পাওয়ার কথা জানান। এবারও হত্যাকাণ্ডে আরসা’কে দায়ী করা হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য সেন টাইমস-এর এক খবরে সরকারি সূত্রের বরাতে নতুন করে পাওয়া গণকবরের কথা জানানো হয়েছে।
রাখাইনে নতুন গণকবরের সন্ধান পাওয়ার দাবি

মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনীর তথাকথিত ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের মুখে প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘ এই সামরিক অভিযানকে জাতিগত নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাও রয়েছেন।

রবিবার ২৮ মরদেহের সন্ধান পাওয়ার পর  নতুন করে পাওয়া গণকবরের ব্যাপারে একজন হিন্দু রোহিঙ্গা নেতা বলেন, সেখানে পাওয়া মরদেহগুলোর ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মানুষের। কতৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই হিন্দু রোহিঙ্গা নেতা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে গণকবর অনুসন্ধানের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন ।

মরদেহগুলোরও ছবি প্রকাশ করেছে মিয়ানমার। তবে স্বাধীনভাবে ছবিগুলো পর্যালোচনা করা সম্ভব হয়নি।

এরআগে রবিবার মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জা হতায় এএফপিকে জানান, রবিবার পাওয়া এসব লাশের মধ্যে ২০টি নারীদের এবং বাকি আটটি পুরুষ ও শিশুদের। স্থানীয় এক পুলিশ কমকর্তাও এএফপিকে একই তথ্য দিয়েছেন। সরকারের তথ্য কমিটির সরবরাহকৃত ছবিতে দেখা যায়, গণকবরের পাশে মরদেহগুলো সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। তবে কোনও সংবাদমাধ্যমের পক্ষেই ছবিগুলো স্বাধীনভাবে পর্যালোচনা করা সম্ভব হয়নি।

গণকবরের সন্ধান পাওয়া এলাকার হিন্দু রোহিঙ্গা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে একটি তালিকা দিয়েছে। সেই তালিকা অনুসারে দুটি গ্রামের ১০২ জন কে হত্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার মিয়ানমারের সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং-র অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, গণকবরের সন্ধান পাওয়ার পর নতুন করে মরদেহ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। মঙ্গলবার নতুন করে ১৭ মরদেহের সন্ধানের খবর জানা গেল।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ)। তাদের দাবি, তারা বেসামরিকদের ওপর কোনও হামলা চালায় না এবং কোনও হিন্দুকেও হত্যাও করেনি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া একটি অডিওবার্তায় ওই মুখপাত্র দাবি করেন, বৌদ্ধ উগ্রবাদীরা হিন্দু-মুসলিম বিভেদ তৈরি করতে চাইছে। এজন্য তারা এআরএসএ সদস্যদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। তিনি বলেন, এআরএসএ অঙ্গীকারবদ্ধ যে কোনও অবস্থাতেই আমরা বেসামরিক ও সাধারণ মানুষদের লক্ষ্য করবো না।