সৌদি জোটের অবরোধ নিয়ে আলোচনায় প্রস্তুত দোহা: কাতারের আমির

শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং জোকো উইদোদোকাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বলেছেন, সৌদি জোটের কাতারবিরোধী অন্যায্য অবরোধে নিয়ে আলোচনায় প্রস্তুত দোহা। আমরা সবাই ভাই ভাই এবং এই সংকট আমাদের সবাইকেই ভোগাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত কেউ এতে বিজয়ী হবে না। বুধবার ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো’র সঙ্গে বৈঠকের পর দেশটির রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন বগর-এ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বলেন, কাতারি আমিরের এই সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রথমবারের মতো তিনি ইন্দোনেশিয়ায় এসেছেন। কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে দুই দেশ ৪১ বছর ধরে একসঙ্গে পথ চলছে।

দুনিয়ার বৃহত্তম মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে আরব বিশ্বের দেশগুলোর ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তবে সৌদি জোটের কাতারবিরোধী অবরোধ নিয়ে অবশ্য ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোনও মন্তব্য করেননি।

চলতি বছরের ৫ জুন সন্ত্রাসবাদে সমর্থনের অভিযোগ এনে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মিসরসহ কয়েকটি দেশ। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে কাতার। বরং সৌদি জোটের অবরোধকে রক্তপাতহীন যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মাদ বিন আব্দুররহমান আলে সানি। তার ভাষায়, সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন কয়েকটি আরব দেশ দোহার বিরুদ্ধে প্রকারান্তরে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।

শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং জোকো উইদোদো

সৌদি জোটের অবরোধের মুখে তুরস্ক ও ইরানের দিকে ঝুঁকে পড়ে কাতার। গত আগস্টে তুর্কি অর্থমন্ত্রী নিহাদ জিবেকজি মন্তব্য করেন কাতারের চাহিদা পূরণে তুরস্কই যথেষ্ট। তিনি বলেন, সৌদি জোটের কাতারবিরোধী অবরোধের পর গত ৫ জুন থেকে কাতারে শতাধিক কার্গো বিমানে বিভিন্ন সামগ্রী পাঠিয়েছে তুরস্ক।

কাতার ইস্যুতে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংকটে শুরু থেকে দোহার পক্ষ নিয়েছে তুরস্ক। চলমান সংকট শুরু হওয়ার আগে ২০১৫ সালে দুই দেশ একটি সামরিক চুক্তিতে উপনীত হয়। কাতারে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটিও রয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আরব বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর দোহাকে অন্যতম মিত্র হিসেবে আঙ্কারার অবস্থানের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু কারণ রয়েছে। ২০১৬ সালে তুরস্কের ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের সময় এরদোয়ানের পাশে দাঁড়ান কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি। অভ্যুত্থান চেষ্টার পর এরদোয়ানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাতারের বিশেষ বাহিনীর ১৫০ সদস্যের একটি ইউনিট তুরস্ক পাঠানো হয়।