বাংলাদেশে প্রতি চারজনে একজনের মৃত্যু হয় দূষণের কারণে

nonameদুনিয়াজুড়ে বাড়ছে দূষণের হার। আর এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ ও সোমালিয়া। এই দুই দেশে মোট মৃত্যুর প্রায় ২৮ শতাংশই হয় পরিবেশ দূষণজনিত নানা রোগের কারণে। অর্থাৎ, দেশে গড়ে প্রতি চারজনে একজনের মৃত্যু হয় দূষণের কারণে। আর পুরো বিশ্বে প্রতি ছয়জনে একজনের মৃত্যু হয় দূষণজনিত কারণে। খ্যাতনামা মেডিকেল জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’-এর এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। শুক্রবার এক প্রতিবেনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বাংলাদেশে আর্সেনিকজনিত পানি দূষণ একটি বড় সমস্য। দেশে প্রায় পাঁচ কোটি ৭০ লাখ মানুষের ব্যবহৃত পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা প্রতি লিটারে ৫০ মাইক্রোগ্রাম। অথচ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা প্রতি লিটারে ১০ মাইক্রোগ্রাম।

দূষণজনিত কারণে মৃত্যু সবচেয়ে কম ব্রুনাই ও সুইডেনে। এ দুই দেশে দূষণজনিত মৃত্যুর হার যথাক্রমে আড়াই শতাংশ এবং প্রায় চার শতাংশ।

তালিকার উপরের দিকে থাকা প্রথম দশটি দেশ হচ্ছে যথাক্রমে বাংলাদেশ, সোমালিয়া, শাদ, নাইজার, ভারত, নেপাল, সাউথ সুদান, ইরিত্রিয়া, মাদাগাস্কার, পাকিস্তান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।

তালিকার নিচের দিকে থাকা দশটি দেশ হচ্ছে যথাক্রমে ব্রুনাই, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, বার্বাডোজ, নিউজিল্যান্ড, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো, কানাডা, আইসল্যান্ড, দ্য বাহামাস, নরওয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।

মোট ১৮৮ দেশের ওপর দুই বছর ধরে পরিচালিত গবেষণার ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, পরিবেশ দূষণের কারণে ২০১৫ সালে দুনিয়াজুড়ে প্রায় ৯০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এদের অধিকাংশই নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর নাগরিক। এসব দেশের প্রায় এক চতুর্থাংশ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী পরিবেশ দূষণ।

দ্য ল্যানসেট-এর প্রতিবেদনে দূষণ বলতে বায়ু, পানি ও মাটি এবং কর্মক্ষেত্রে দূষিত পরিবেশের কথা বলা হয়েছে।

দূষণজনিত কারণে সংঘটিত মোট মৃত্যুর দুই তৃতীয়াংশই ঘটে বায়ু দূষণের কারণে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পানি দূষণ। বায়ু ও পানি দূষণের কারণে বছরে যথাক্রমে ৬৫ লাখ এবং প্রায় ১৮ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। আর কর্মক্ষেত্রে দূষণজনিত কারণে মৃত্যু হয় আট লাখ মানুষের। বায়ু দূষণে মৃত্যুর অধিকাংশই ঘটে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও ফুসফুসে ক্যান্সারের মতো অসংক্রামক রোগে।