পাকিস্তানের সেই ছাত্রাবাসটি জঙ্গিমুক্ত, হামলাকারীসহ নিহত ১৩

অবশেষে বন্দুকধারীদের কবল থেকে পেশাওয়ারের এগ্রিকালচার ট্রেইনিং ইন্সটিটিউটের সেই ছাত্রাবাসটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, হামলায় এখন পর্যন্ত ৯ শিক্ষার্থী নিহত এবং ৩৭ জন আহত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছে তারা। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দফতর জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে চার হামলাকারী নিহত হয়েছে। সবমিলে এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ১৩। এরইমধ্যে হামলার দায় স্বীকার করেছে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান।

হামলার পর হোস্টেলের চারপাশে অবস্থান নেয় নিরাপত্তা বাহিনী
ডন জানায়, শুক্রবার সকালে বোরকা পরিহিত সন্দেহভাজন হামলাকারীরা গুলি ছুড়তে ছুড়তে ছাত্রাবাস ভবনে প্রবেশ করে। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফ্রন্টিয়ার কর্পসের সদস্যরা ঘটনাস্থলটি ঘিরে ফেলে। জিম্মিদের উদ্ধারে শুরু হয় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান। হেলিকপ্টার টহলের মাধ্যমে পুরো এলাকার ওপর নজর রাখে সেনাবাহিনী। শামা টেলিভিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তত ৩ জন বন্দুকধারী ভোরের দিকে ধারাবাহিক গুলি চালিয়ে পেশাওয়ার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ঢুকে পড়ে।

এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে হামলাকারীরা নিহত হয়। খাইবার পাখতুনখোয়ার পুলিশ জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সফল অভিযানের মাধ্যমে সকল জঙ্গিকে পরাস্ত করা হয়েছে। অবশ্য, ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারা ডনকে জানিয়েছেন, পরাস্তকৃত হামলাকারীর সংখ্যা চার।

সাঁজোয়া যানের মাধ্যমে আহতদের উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে আছেন-স্টেশন হাউস অফিসার (এসএইচও), কনস্টেবল এবং শিক্ষার্থী। তাদেরকে খাইবার টিচিং হাসপাতালে তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

হায়াতাবাদ মেডিক্যাল কমপ্লেক্স এর পরিচালক শাহজাদ আকবর বলেছেন, হামলার পর তাদের হাসপাতালে ছয়টি মরদেহ এবং ১৮ জন আহতকে নিয়ে আসা হয়েছে। আর খাইবার টিচিং হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, তাদের হাসপাতালে তিনটি মৃতদেহ এবং ১৭ জন আহতকে নেওয়া হয়েছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ জানিয়েছে, হামলায় দুই সেনা আহত হয়েছে। তাদেরকে চিকিৎসার জন্য পাকিস্তানের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হামলার সময় ভেতরে ঠিক কতজন আবাসিক অবস্থান করছিলেন সে ব্যাপারেও সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। ভেতরে ২০-২৫ জন ছিলেন বলে জানিয়েছে ডন। আর স্থানীয় সূত্রকে উদ্ধৃত করে শামা টিভি জানিয়েছে, সেখানে ৪০ জনের মতো আবাসিক অবস্থান করছিলেন। অবশ্য, এহতেশানুল হক নামের এক শিক্ষার্থী ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, হোস্টেলটিতে ৪০০ আবাসিক থাকলেও তাদের বেশিভাগই এখন ছুটি কাটাতে গেছেন। ১২০ জনের মতো শিক্ষার্থী হোস্টেলটিতে অবস্থান করছিলেন।