জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস ভবনের নকশা চূড়ান্ত!

যুক্তরাষ্ট্র এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের তেল আবিব থেকে দূতাবাস সরানোর ঘোষণা না দিলেও জেরুজালেমে দূতাবাস স্থাপনের জন্য ভবনের নকশা চূড়ান্ত করে ফেলেছে বলে দাবি করেছে মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল ডব্লিউএসবি। তারা জানায় ইতোমধ্যে ভবনের নকশা চূড়ান্ত করেছেন এক মার্কিন স্থপতি। সোমবার ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

US ambassy tel abib

প্রতিবেদনে বলা হয়,মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও দূতাবাস স্থানান্তরের বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন বলে জানানো হলেও নতুন দূতাবাস ভবনের পরিকল্পনা ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে একজন মার্কিন স্থপতিকে জেরুজালেমে পাঠানো হয়। তিনিই সেখানে দূতাবাস স্থাপনের জায়গাগুলো পরীক্ষা করেন।

বর্তমানে তেল আবিবে মার্কিন দূতাবাসটি হোটেলের মতো হলেও নতুন পরিকল্পনায় বেশকিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন ভবনে থাকার জায়গা, জরুরি বহির্গমন, নিরাপদ কক্ষ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।

ইহুদি-খ্রিস্টান ও মুসলিম; তিন সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ ধর্মীয় তীর্থস্থান জেরুজালেম। শুক্রবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্টসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে জানায় চলতি মাসের ৬ তারিখেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পশ্চিম জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থাপনের ঘোষণা করতে পারেন। নির্দিষ্ট ওই দিনটিতেই ট্রাম্পের পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হবে কিনা, তবে আল জাজিরার সোমবারের প্রতিবেদনে তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। ট্রাম্পের জামাতা বলেন, ‘ট্রাম্প যখন সিদ্ধান্তে পৌঁছাবেন, তখন নিজে থেকেই তা ঘোষণা করবেন। তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট এখনও বিকল্প চিন্তা করছেন।’

ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচআর ম্যাকমাস্টারও সোমবার বলেছেন, তিনি এখনও জানেন না তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেওয়া হবে কীনা। তিনি জানান,  এই বিষয়ে ট্রাম্পকে তার পরামর্শকরা বেশকিছু বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন। 

নিজের নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন যে তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে নেবেন। তবে এখনও সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারেননি তিনি। এই পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলেই জেরুজালেম ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন স্বীকৃতি পাবে। ট্রাম্পের পদক্ষেপ রুখতেই আরব লিগ আর ওআইসিকে বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। রয়টার্স শীর্ষ একজন মার্কিন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, ট্রাম্পের পদক্ষেপ ঠেকাতেই বৈঠক আয়োজনে তৎপর হয়েছে জর্ডান।

শুক্রবার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে দূতাবাস সরানোর প্রক্রিয়া আরও দেরী হতে পারে। তবে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমকে ঘোষণা দিতে পারে তারা। সেক্ষেত্রে অনেক দিনের মার্কিন নীতি থেকে সরে আসবে যুক্তরাষ্ট্র।

অনেকের ধারণা তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নিলে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা আরও বাড়বে এবং ফিলিস্তিনিরা অসন্তুষ্ট হবে। ১৯৮০ সালে জেরুজালেমকে রাজধানী ঘোষণা করেছিল ইসরাযয়েল। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এর সমর্থন দেয়নি। ফিলিস্তিনিরা চায় দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেম যেন রাজধানী হয়।

এখনও কোনও দেশের দূতাবাসই জেরুজালেমে নেই। সবগুলো দূতাবাসই তেল আবিবে অবস্থিত। প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন এর সাধারণ সম্পাদক সায়েব এরেকাত এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে জেরুজালেম।