কয়েকবছরের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ভারতীয় বিদ্রোহীদের ঘাঁটি প্রায় নির্মূল করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএসএফ। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী এই বাহিনীর মহাপরিচালক কে কে শর্মার দাবি, দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের যৌথ তৎপরতায় বিদ্রোহীদের ঘাঁটি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সংখ্যা ‘প্রায় শূন্যতে’ নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশি মাটিতে কোনও সন্ত্রাসী বা বিদ্রোহী ঘাঁটি নেই বলে নিশ্চিত করতে গিয়ে তিনি বলেন, এখনও যদি কেউ থেকে থাকে তবে তারা ভাসমান। এই অর্জনে বিজিবিকে অভিনন্দন জানান বিএসএফ মহাপরিচালক।
পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ সীমান্তে এমন পরিবর্তনকে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীগুলোর বড় বিজয় বলে মনে করা হচ্ছে। বিএসএফের এক সিনিয়র কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত কয়েক বছর ধরে বিএসএফ প্রতি বৈঠকে বিজিবিকে বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের লিস্ট ধরিয়ে দিতো এবং ব্যবস্থা নিতে বলতো। তিনি বলেন, ‘প্রতিবার এই সংখ্যা থাকতো ১৫০-২০০। পরিস্থিতি এখন পাল্টে গেছে। পালিয়ে বেড়াচ্ছে বিদ্রোহীরা। বাংলাদেশের কোথাও ঘাঁটি করতে পারছে না তারা।’
সীমান্তের আরেক কর্মকর্তা বলেন, চট্টগ্রাম হিলি সীমান্তে খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের মতো এলাকায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ভারত বিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছিলো। এখন আর তেমন কোনও কার্যক্রম নেই। তিনি বলেন, ‘মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকসহ অন্যান্য বেঠকে এই বিষয়ে বারবার গুরুত্বারোপ করা হয়। বিজিবিও এই বনগুলোতে বেশ কয়েকটি অভিযান চালায়। ফলে বিদ্রোহীরা সব পালিয়ে যায়।’
একটি সরকারি নথিকে উদ্ধৃত করে ওই কর্মকর্তা জানায়, বিজিবিই এখন এই এলাকাগুলোতে স্থায়ী ঘাঁটি তৈরি করেছে যেন বিদ্রোহী ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো আর ফিরে আসতে না পারে। ওই কর্মকর্তা জানান, এই অঞ্চলে ‘ইন্ডিয়ান ইনসার্জেন্ট গ্রুপ(আইআইজি)’ এর বিদ্রোহীরা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা এন্ড মণিপুর নামে কাজ করছিলো। কেউ কাজ করছিলো ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট নামে।
আসামের উত্তর ত্রিপুরা ও কাচার সংলগ্ন বাংলাদেশের মৌলভীবাজার ও শেরপুরেও ঘাঁটি ছিলো ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা) এর।
ওই কর্মকর্তা জানান, এই অঞ্চলে বিজিবির অভিযানে পরিস্থিতির উন্নয়ন হয়েছে। বিএসএফও সহযোগিতা করেছে। গোয়েন্দা তথ্য ছাড়াও সেনা সহায়তা দিয়েছে তারা।
২০১৫ সাল থেকে সীমান্তে অপরাধ দমনে যৌথ টহল অভিযান চালিয়েছে বিএসএফ ও বিজিবি। বাংলাদেশের ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে অবস্থান করে বিএসএফ।