বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্ক আদালতে হাজির করা হবে আকায়েদকে

নিউ ইয়র্কে বোমা হামলার চেষ্টা করা আকায়েদ উল্লাহকে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কের আদালতে হাজির করা হবে। বাংলাদেশি সময়ে সেটা হবে শুক্রবার সকাল। ১১ ডিসেম্বর নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনে চালানো ওই হামলায় তিনজন আহত হয়েছিলেন। বাংলাদেশি যুবক আকায়েদ উল্লাহ নিজেও সেদিন আহত হন। এরপর থেকেই পুলিশের হেফাজতের আসেন তিনি।

আকায়েদ

বৃহস্পতিবার তাকে বিচারক সালিভানের সামনে হাজির করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ২০ বছরের জেল হতে পারে তার। বুধবার আকায়েদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে তিনি জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসকে সহায়তা করছিলেন এবং বড় ধরনের হামলার অস্ত্র তৈরি করছিলেন।

বোমা হামলা ও হামলার চেষ্টা ছাড়াও বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগ বা বিস্ফোরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ডানা বোয়েন্তে বলেন, আকায়েদ উল্লাহ নিউ ইয়র্কে একটি পাইপ বোমা বিস্ফোরণ ঘটান। তিনি আইএস দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালানোর চেষ্টা করেন।

ছয় বছর আগে বাংলাদেশে থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যান আকায়েদ উল্লাহ। তার চাচার মাধ্যমে ভিসা পান তিনি। আর চাচা ডিভি লটারি জিতে মার্কিন নাগরিকত্ব পান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অনেকদিন ধরেই এই নিয়মের বিরোধিতা করে আসছেন।

মার্কিন অ্যাটর্নি জফরি বারম্যান বলেন, এক মাসের কম সময় আগেই এক ব্যস্ত সময়ে আকায়েদ উল্লাহ নিউ ইয়র্কে বোমা হামলা চালানোর চেষ্টা করেন। সময় ও স্থান নির্বাচনে বোঝা যায় যে তিনি সর্বোচ্চ ক্ষয়ক্ষতি করতে চেয়েছিলেন। নিউ ইয়র্কবাসীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়াতে চেয়েছিলেন। তবে তিনি ব্যর্থ।

হামলার পরপরেই আকায়েদকে গ্রেফতার করা হয়। বেলভিউ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় তাকে। তখনও তদন্তকাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন গোয়েন্দারা। সেসময়ই ৯ ভোল্টের ব্যাটারির খোঁজ মেলে তার পকেটে। তার জ্যাকেটে পাওয়া যায় দুটি প্লাস্টিক জিপ, লৌহ পাইপের অংশ ও ক্রিসমাস ট্রি লাইট।

জিজ্ঞাসাবাদের সময় আকায়েদউল্লাহ নিজেই জানান আইএস দ্বারা অনুপ্রাণিত তিনি। তিনি বলেন, ‘আমি আইএসের জন্যেই এই হামলা চালাই।’

ব্রুকলিনে নিজের বাসায় বসেই বোমা তৈরি করেন আকায়েদ। একটি ধাতব পাইপের মধ্যে তিনি বিস্ফোরক ভরেন। তার, ব্যাটারি ও ক্রিসমাস ট্রি এর বাতি ব্যবহার করেন। বোমার ভেতরে স্ক্রু বসানো ছিলো যেন সর্বোচ্চ ক্ষতি করা যায়। জিপ টাই দিয়ে শরীরের সঙ্গে বোমা আটকে রেখেছিলেন আকায়েদ।

আকায়েদ নিজেই পুলিশকে জানান, মার্কিন সরকারের মধ্যপ্রাচ্য নীতির কারণেই তার হামলা। তার উদ্দেশ্য ছিল আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়া। এজন্যই কর্মদিবসে হামলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

ফেডারেল গোয়েন্দারা দাবি করেন, ২০১৪ সালে আকায়েদ আইএস দ্বারা অনুপ্রাণিত হতে শুরু করেন। আইএস থেকে ভিডিও বার্তায় জানানো হয়, যেই সমর্থকরা দেশ পাড়ি দিয়ে আইএস যোগ দিতে পারছেন না তারা যেন নিজ দেশেই হামলা চালায়। এই ভিডিওতে অনুপ্রাণিত হয়ে আকায়েদ ইন্টারনেটে খুঁজতে শুরু করেন কিভাবে বোমা তৈরি করা যায়।

হামলার দিন সকালে তিনি ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘ট্রাম্প, তুমি তোমার জাতিকে রক্ষা করতে ব্যর্থ।’ আরেকটি বিবৃতিতে তিনি বলেন, তিনি আইএসের নামেই হামলা চালাচ্ছেন। আকায়েদের বাড়ি থেকে অনেকগুলো পাইপ, ক্রিসমাস ট্রি লাইট ও স্ক্রু পাওয়া গেছে। অনেকগুলো হাতে লেখা নোট ছিলো। সেখানে লেখা। ‘আমেরিকা নিজের আগুনেই মরবে তুমি।’