‘ছদ্মবেশী তালেবান সদস্য'র গুলিতে সরকার-সমর্থক ১৬ যোদ্ধা নিহত

দলের অভ্যন্তরেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন আফগান সরকারের সমর্থক এক সশস্ত্র গোষ্ঠীর ১৬ সদস্য। আফগান কর্মকর্তারা ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে দাবি করেছেন, দলীয় সদস্যের ছদ্মবেশ নিয়ে সরকার সমর্থক ওই সশস্ত্র গোষ্ঠীতে আশ্রয় নিয়েছিল অনুপ্রবেশকারী এক তালেবান সদস্য। গুলি চালিয়ে সে ওই গোষ্ঠীর ১৬ সদস্যকে হত্যা করেছে। তালেবান এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
ফাইল ছবি

জানুয়ারিতে এক সপ্তাহের মধ্যে কাবুলে ৩টি বড় হামলা সংঘটিত হয়েছে। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে জালালাবাদে সেভ দ্য চিলড্রেনের কার্যালয়ের সামনে আত্মঘাতী গাড়িবোমা বিস্ফোরণে ২ জন নিহত ও ১২ জন আহত হওয়ার খবর জানানো হয়। জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর পক্ষ থেকে হামলার দায় স্বীকার করে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। শনিবার তালেবানের অ্যাম্বুলেন্স বোমা হামলায় নিহত হয় শতাধিক মানুষ। সোমবার আইএসের দায় স্বীকার করা কাবুলের মিলিটারি একাডেমির হামলায় নিহত হন ১১ সেনা। সেই ধারাবাহিকতায় এবার হেলমন্দ প্রদেশে শনিবার আফগান সমর্থক বাহিনী হামলার শিকার হলো।

আফগান কর্মকর্তাদের সূত্রে রয়টার্স জানায়, দক্ষিণের হেলমন্দ প্রদেশে সরকার সমর্থক ওই গোষ্ঠী হঠাৎ করেই অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের কবলে পড়ে। একজন সদস্য আকস্মাৎ দলের অপর সদস্যদের ওপর গুলি চালাতে থাকে। এ সময় তাকে ছদ্মবেশী তালেবান সদস্য হিসেবে শনাক্ত করা হয়। আফগান নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তালেবানকে দমনে সরকারের পক্ষ থেকে এমন সশস্ত্র গোষ্ঠী গড়ে তোলা হয়েছে। তবে যে গোষ্ঠীর অভ্যন্তরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, তা সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই ওই মুখপাত্রের। ‘আমরা জানি সরকারের সমর্থক এক সশস্ত্র গোষ্ঠীর ১৬ সদস্যকে হত্যা করেছে এক তালেবান যোদ্ধা। তবে ওই বাহিনীতে কে বা কারা আছে তা আমাদের জানা নেই’- বলেন উমর জ্যাক নামের ওই মুখপাত্র। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেছেন, কয়েক মাস আগে ওই তালেবান সদস্য ছদ্মবেশে ঢুকেছিলেন সরকার-সমর্থক ওই গোষ্ঠীর অভ্যন্তরে। শনিবার দলের সদস্যদের হত্যার পর বন্দুক আর গোলাবারুদ নিজের দখলে নেয় সে।

ওই হত্যাকাণ্ডে দুই সদস্য জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে তালেবান।

যুক্তরাষ্ট্র আর তাদের মিত্ররা ধারাবাহিক অভিযোগ করে আসছে, আফগান তালেবান ও তাদের মিত্র হাক্কানি নেটওয়ার্ককে পাকিস্তানে ‘নিভৃত আবাস’ গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছে ইসলামাবাদ। নতুন বছরের টুইটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মিথ্যাচার ও সন্ত্রাসবাদে মদদের অভিযোগ তুলে পাকিস্তানে সহায়তা বন্ধের হুমকি দেওয়ার পর জানুয়ারির শুরুর সপ্তাহে নিরাপত্তা সহযোগিতা স্থগিতের ঘোষণা দেয় ওয়াশিংটন। মাসের শেষ সপ্তাহে এসে একের পর এক হামলার শিকার হতে শুরু করে আফগানিস্তান।

৯/১১ হামলার পর ২০০১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবাদবিরোধী নতুন যুদ্ধ’ শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। আল কায়েদাকে সমর্থন ও আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হয় তালেবানকে। গঠন করা হয় মার্কিন সমর্থিত সরকার, যা পুতুল সরকার আখ্যা পায়।