রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিরাপদ করতে অধিকারের সুরক্ষা জরুরি: ইউএনএইচসিআর

মিয়ানমারের পরিস্থিতি এখনও রোহিঙ্গাদের ফেরার অনুকূলে নয় বলে নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সংস্থার প্রধান ফিলিপ্পো গ্রান্ডি নিরাপত্তা পরিষদকে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার জন্য তাদের অধিকারের সুরক্ষার বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

রোহিঙ্গা শরণার্থী
গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এ ঘটনায় খুঁজে পেয়েছে মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি আর ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স নিজস্ব অনুসন্ধানের মধ্য দিয়ে তুলে এনেছে নারকীয় হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের ভয়াবহ বাস্তবতা। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন এই ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ আখ্যা দিয়েছে। রাখাইনের সহিংসতাকে জাতিগত নিধন আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। তারা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।

মঙ্গলবার নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া এক ভিডিও ভাষণে ইউএনএইচসিআর-এর হাই কমিশনার গ্রান্ডি বলেন, ‘এ সংকটের উৎপত্তি মিয়ানমারে হয়েছে এবং এ সংকট সমাধানের পথ বের করতে বিশুদ্ধ একটি অনুসন্ধান প্রক্রিয়া চালাতে হবে। এর মূলে থাকবে শরণার্থীদের স্বেচ্ছা ও নিরাপদে, মর্যাদাপূর্ণ অবস্থায় বাড়িতে ফেরার অধিকারসহ অধিকারগুলোর পুনরুদ্ধারের বিষয়টি।’

রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের অপরীসিম প্রচেষ্টার কথা স্বকিার করেছেন গ্রান্ডি। তবে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, আসন্ন বর্ষাকালকে মাথায় রেখে রোহিঙ্গাদের অবস্থার উন্নতি করতে হবে। গ্রান্ডি বলেন, ‘বড় ধরনের জরুরি অবস্থাগুলো নিয়ে আমরা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌড়াচ্ছি। আমাদের হিসাবে ১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বন্যা ও ভূমিধসপ্রবণ এলাকাগুলোতে আছেন। লাখো রোহিঙ্গাকে জরুরি ভিত্তিতে স্থানান্তর করা প্রয়োজন। তাদের জীবন মহা হুমকিতে আছে।’