প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাসহ ৯টি খাতে ভারত-ইরান সমঝোতা

 

শনিবার তেহরান ও দিল্লির মধ্যে ৯টি খাতে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির তিন দিনের সফরের শেষদিনে  ভিসা প্রক্রিয়া সহজতর করা, চিকিৎসা খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং ছাবাহার সমুদ্রবন্দর উন্নয়নসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে এসব সমঝোতা হয়। এদিকে তেহরানভিত্তিক পার্সটুডে জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যকার সমঝোতা আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
৯ খাতে ভারত-ইরান সমঝোতা

শনিবার সকালের শুরুতেই নয়া দিল্লিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান ভারতের প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে ড. রুহানিকে প্রেসিডেন্ট ভবনে স্বাগত জানানো হয়। সে সময় দু’দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর ইরানের প্রেসিডেন্ট পৌঁছন রাজঘাটে। মহাত্মা গান্ধীকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন তিনি। এরপর তিনি দেখা করেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে।

বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে রুহানির বৈঠকের পর দিল্লির হায়দারাবাদ হাউসে দুই দেশের প্রতিনিধি-স্তরের বৈঠক হয়।  বৈঠকে ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানি এবং  ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদির উপস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে ৯টি খাতে সমঝোতা হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবর অনুযায়ী, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক ইস্যুকে প্রাধান্য দিয়ে এসব সমঝোতা হয়েছে।

সমঝোতার পর দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে হাসান রুহানি দুই দেশের ঐতিহ্যগত ও ঐতিহাসিক সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন। তাকে উদ্ধৃত করে এশিয়ান এজ লিখেছে, ‘ভারত-ইরান সম্পর্ক কেবল বাণিজ্য আর কূটনীতির সম্পর্ক নয়। আমাদের সম্পর্ক ঐতিহ্যগত আর ঐতিহাসিক।’ নরেন্দ্র মোদি তার বিবৃতিতে ইরানি প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘ইরান ও ভারত পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’ রুহানির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনার তৎপরতায় দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে।’

তেহরানভিত্তিক পার্সটুডে লিখেছে, ভারত-ইরান সম্পর্ক আজকের নয়। ইরান অন্যতম রাষ্ট্র হিসেবে নোবলজয়ী রবীন্দ্রনাথকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানিয়েছিল। সেই সম্মাননার বর্ষপূর্তিতে ইরানের জাতীয় সংসদ 'মজলিস' চত্বরে বসেছে বিশ্বকবির বিশেষ ভাস্কর্য। কবির ইরান (পারস্য) যাত্রা সুবাদে দুই দেশের যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল তা বরাবরই স্বীকার করে ইসলামি প্রজতন্ত্র ইরান সরকার।

এনডিটিভি বলছে, শুক্রবারই হায়দরাবাদে রুহানি জানান, ভারতের জন্য ইরানের ছাবাহর বন্দর থেকে আফগানিস্তান হয়ে মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে ইউরোপ পর্যন্ত ট্রানজিট রুট উন্মুক্ত হবে। তবে পাকিস্তানের সীমানার ওপর দিয়ে এই পথ যাবে না। এ অবস্থায় ইরান ও ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক যে আরও দৃঢ় হতে চলেছে তা বলাই বাহুল্য।