পরমাণু ইস্যুতে সব মার্কিন শর্ত প্রত্যাখ্যান তেহরানের

পাশ্চাত্যের সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা বহাল রাখার জন্য মার্কিন সরকার যেসব শর্ত দিয়েছে তা ‘ভ্রান্ত’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরান। ইরান উল্টো ওই সমঝোতায় নিজের দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
noname

ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত ওই চুক্তিটিতে মার্কিন সমর্থন কার্যকর রাখতে প্রতি ছয় মাস অন্তর প্রেসিডেন্টের সম্মতির দরকার পড়ে। চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই অনুমোদন দেওয়ার সময় জানিয়ে দেন চুক্তিটিতে থাকা ‘ত্রুটি’ সংশোধন না করলে আর অনুমোদন দেবেন না তিনি। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি চলমান রাখার বিষয়ে ওই চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের একজন পদস্থ কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন ছয়টি পূর্বশর্ত দিয়েছে । ট্রাম্প প্রশাসন ওই ছয়টি ইস্যুতে ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে শলাপরামর্শ করছে।তবে ওই চুক্তিতে কোনও ধরনের সংশোধনীর প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে ইরান।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ গতকাল (শনিবার) তেহরানে সাংবাদিকদের বলেছেন, “একটি সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী কোনো পক্ষ ওই সমঝোতা বাস্তবায়নের জন্য শর্ত আরোপ করতে পারে না। আমেরিকা এর আগে কিছু শর্ত দিয়েছিল যেগুলো ছিল ভ্রান্ত এবং তাদের নতুন শর্তগুলিও অসমীচীন।”

প্রথম দিকে তিনি ইরানের সামরিক ঘাঁটিগুলোতে পরিদর্শন এবং সেদেশের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি সীমিত করে ফেলার দাবি তুলেছিল আমেরিকা। কিন্তু এর সঙ্গে আরো শর্ত যোগ করে এখন ইরানের মানবাধিকার পরিস্থিতি, সাইবার জগতে ইরানের কথিত হুমকি এবং দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অর্থনৈতিক তৎপরতাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে এসবের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলছে ট্রাম্প প্রশাসন। এ সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জারিফ বলেন, নিজের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নে মার্কিন সরকারের ব্যর্থতা ধামাচাপা দেয়ার লক্ষ্যে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে এসব দাবি তোলা হচ্ছে।  জারিফ বলেন, “আন্তর্জাতিক সমাজ জানে, এসব শর্তের একটিও মেনে নেয়া তো দূরের কথা বিবেচনা করারই যোগ্য নয়।”

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এখন আন্তর্জাতিক সমাজের উচিত পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে এটি হুবহু বাস্তবায়নের জন্য আমেরিকার ওপর চাপ সৃষ্টি করা। এটিই এখন আমাদের প্রধান সমস্যা।”