যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ চায় না চীন: বেইজিং

চীনা পার্লামেন্টের মুখপাত্র ঝাং ইয়েসুই বলেছেন, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনও বাণিজ্য যুদ্ধ চায় না। রবিবার পার্লামেন্টের বিদায়ী অধিবেশন শুরুর প্রাক্কালে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

nonameবৃহস্পতিবার টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রে ইস্পাত আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ১০ শতাংশ কর আরোপের পরিকল্পনার কথা জানান ট্রাম্প। আগামী সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি কার্যকর করা হবে বলেও উল্লেখ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর প্রেক্ষিতেই চীনের পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য এলো। বেইজিং বলছে, নিজেদের স্বার্থ সুরক্ষায় তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য প্রতিবিধান ও তদন্ত ব্যুরোর প্রধান ওয়াং হেজুন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের ওই সিদ্ধান্ত বহুপাক্ষিক বাণিজ্য প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। স্বাভাবিক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ওপর এর প্রভাব পড়বে।

তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত যদি যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ চীনের স্বার্থের ওপর আঘাত হানে তাহলে নিজ অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য দেশের সঙ্গে মিলে উদ্যোগ নেবে বেইজিং।

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, যদি সব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে তাহলে বিশ্ব বাণিজ্যের শৃঙ্খলায় নিঃসন্দেহে মারাত্মক প্রভাব পড়বে।

এদিকে ট্রাম্পের ওই টুইটের পর যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত, কৃষিসহ অন্যান্য পণ্যের ওপর কর বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান জিন ক্লাউডি জানকার এর কঠোর জবাব দেওয়ার সংকল্প ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘কোনও অন্যায্য ব্যবস্থার কারণে আমাদের শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমরাও চুপ করে বসে থাকবো না। এমন হলে হাজার হাজার ইউরোপিয়ানের চাকরি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। আমরা হার্লি-ডেভিসন, লেভিস-এর বোরবোন ও নীল জিনসের ওপর কর আরোপ করবো।’

ফ্রান্সের অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লি মাইরে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ বাণিজ্য যুদ্ধে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি বিষয়টি নিয়ে  ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের শক্তিশালী, সহযোগিতামূলক ও সমন্বিত প্রতিক্রিয়া’র ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনা করছে কানাডা, মেক্সিকো, চীন ও ব্রাজিলও। কানাডা যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি ইস্পাত রফতানি করে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এই কর আরোপকে ‘পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তারা কানাডার শিল্পকে রক্ষা করতে সমর্থ হবেন বলে তিনি আত্মবিশ্বাসী।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, ট্রাম্পের এই বিধিনিষেধ শুধু যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেই প্রভাব ফেলবে না, বরং এটি যুক্তরাষ্ট্রের নিজের অর্থনীতিরও ক্ষতি করবে।