‘যুক্তরাষ্ট্রের জেরুজালেম পদক্ষেপ ইসরায়েলি প্রচারণা মেনে নেওয়ার শামিল’



জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বীকৃতি `ইসরায়েলি অ্যাখ্যানের আনুষ্ঠানিক বরণ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন ইসরায়েলের একজন সংসদ সদস্য। আহমেদ তিবি নামে ওই আরব ইসরায়েলি সংসদ সদস্য শনিবার যুক্তরাজ্যের লন্ডনে একটি কনফারেন্সে বক্তব্য দেওয়ার সময় এই কথা বলেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

ইসরায়েলি সংসদ সদস্য আহমেদ তিবি

গত বছরের ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েলের মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতির কথাও জানান তিনি। এরপর বিশ্বজুড়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় ওঠে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে একটি প্রস্তাবও পাস হয়েছে। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে আগামী মে মাসের মধ্যে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস সরানোর কথা জানিয়েছে ওয়াশিংটন।

‘ট্রাম্প কি দখলদারীর বৈধতা দিচ্ছেন?’ শিরোনামে আয়োজিত কনফারেন্সে আহমেদ তিবি বলেন, ‘ট্রাম্পের দূতাবাস সিদ্ধান্তের সবচেয়ে ভয়ানক বিষয় হলো এতে বলা হয়েছে, কোথায় রাজধানী হবে তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে। কারণ তাদের তাদের পার্লামেন্ট ও সুপ্রিম কোর্টের অবস্থানও জেরুজালেমে।’ তিবি বলেন, ‘এর মাধ্যমে ইসরায়েলি অ্যাখ্যানকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়া হলো।’

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলছে, মে মাসে দূতাবাস স্থানান্তর করা হবে আর ২০১৯ সালের মধ্যে সেখানে দূতাবাস সম্প্রসারণ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক দশকের বিদেশ নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে তারা এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করছে। মধ্যপ্রাচ্য পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা মিডলইস্ট মনিটর আয়োজিত ওই লন্ডন কনফারেন্সে রাজনীতিক আন্দোলন কর্মী, শিক্ষাবিদরা ট্রাম্পের এমন পদক্ষেপের ভয়ানক পরিণতির কথা উল্লেখ করেন।

মধ্যপ্রাচ্যে ‘চূড়ান্ত চুক্তি’ করতে যাচ্ছেন বলে ট্রাম্পের দাবি করেছেন নাকচ করে দিয়ে আহমেদ তিবি বলেন, এটা পরিষ্কার যে যুক্তরাষ্ট্র আর যথাযথ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বিবেচিত হবে না। তিনি বলেন, ‘‘ইসরায়েলিদের বলা হচ্ছে ‘তোমরা সব পাবে’ আর ফিলিস্তিনিদের বলা হচ্ছে ‘তোমরা কিছুই পাবে না’। এর মানে সেখানে কোনও চুক্তিই নেই। দ্বৈত নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র এই দ্বন্দ্বে আর মধ্যস্থতাকারী হতে পারবে না।’’

আহমেদ তিবি বলেন, ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ফিরে আসার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সমাধানেও ব্যর্থ হয়েছে।