যুক্তরাজ্যে রুশ গুপ্তচর হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত নার্ভ এজেন্টের সন্ধান

যুক্তরাজ্যে বসবাসরত পক্ষত্যাগী সাবেক রুশ গোয়েন্দা সের্গেই স্ক্রিপালের হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত নার্ভ এজেন্টের সন্ধান মিলেছে। কন্যাকে নিয়ে তিনি যেখানে দুপুরের খাবার খেয়েছিলেন- জিজ্জি নামের সলসবেরির ওই পিজার দোকানেই তার স্নায়ুকে আঘাতকারী এই নার্ভ এজেন্টের খোঁজ মিলেছে। অন্তত পাঁচটি স্থানে ফরেনসিক তদন্ত চালানোর পর পিজার দোকানে এর সন্ধান মিলে।

nonameরেস্টুরেন্টটিতে ওই সময়ে আর কারও উপস্থিতির বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা। স্থানটি বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।

পিজা দোকানটি ছাড়াও সের্গেই স্ক্রিপালের বাড়ি, একটি পানশালা এবং তার স্ত্রী ও ছেলের যেখানে সমাধি রয়েছে, সেখানেও সন্ধান করা হচ্ছিল নার্ভ এজেন্ট রাসায়নিকের।

জিজ্জিতে দুপুরের খাবারের অন্তত দুই ঘণ্টা পর সাবেক ওই রুশ গুপ্তচর ও তার মেয়েকে অত্যন্ত সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় কাছের একটি পার্ক থেকে উদ্ধার করা হয়। তাদের উদ্ধারে যাওয়া একজন পুলিশ কর্মকর্তাও গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

ঘটনার তদন্তে অন্তত আড়াইশ কাউন্টার টেরোরিজম পুলিশ সদস্যসহ সামরিক বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছে।

সের্গেই ক্রিসপাল এবং তার মেয়ে ইউলিয়া উভয়েই এখনও আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

নার্ভ এজেন্ট হচ্ছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিষাক্ত রাসায়নিক যা স্নায়ুতন্ত্রকে বিকল বা অকার্যকর করে দিতে পারে। এতে দৈহিক কর্মক্ষমতা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

রাশিয়ার একজন সামরিক গোয়েন্দা হিসেবে নিজ দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা এমআইসিক্সকে ইউরোপে রাশিয়ার গোয়েন্দাদের সম্পর্কে তথ্য দিতেন সের্গেই স্ক্রিপাল। এ ঘটনায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে রাশিয়া। পরে গুপ্তচর বিনিময়ের আওতায় মুক্তি পেয়ে তিনি যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। বিশ্বাসঘাতকদের হত্যার বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অতীত ইঙ্গিত রয়েছে।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন, এই ঘটনায় রুশ সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেলে তার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হবে। মস্কো অবশ্য এতে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করছে।

গত ৪ মার্চ সালসবেরি শহরের একটি বিপণিকেন্দ্রের বেঞ্চে সের্গেই ক্রিসপাল এবং তার ৩৩ বছরের কন্যা ইউলিয়াকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এমপিদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনকে। এমপিদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যদিও তদন্ত ছাড়াই কাউকে অপরাধী সাব্যস্ত করা একটি ভুল পদক্ষেপ, তারপরও আমি পার্লামেন্টকে আবারও এটা নিশ্চিত করছি যে, এর প্রমাণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের ওপরই বর্তায়। সরকার যথাযথ ও কঠোর পদক্ষেপ নেবে।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে লন্ডনে খুন হন কেজিবির সাবেক গুপ্তচর আলেকজান্দার লিটভিনেঙ্কো। ওই খুনের ঘটনায়ও যুক্তরাজ্যের অভিযোগের তীর ক্রেমলিনের দিকে। সূত্র: বিবিসি।