রোহিঙ্গা সংকটের মধ্যে বিশেষ আসিয়ান সম্মেলনে যোগ দিতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন সু চি

নিজ দেশে রোহিঙ্গা নিপীড়নের অভিযোগ চলার মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের একটি বিশেষ সম্মেলনে যোগ দিতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি। আগামী ১৭ ও ১৮ মার্চ সিডনিতে আসিয়ান-অস্ট্রেলিয়া শীর্ষক বিশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।  আসিয়ানভুক্ত দশ দেশের নেতাদের সঙ্গে এই সম্মেলনে থাকবেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি

গত বছরের আগস্টে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পূর্ব পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। স্থানীয়দের সঙ্গে মিলে সেনাবাহিনী সেখানে খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মতো নৃশংসতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। জাতিসংঘ এই সহিংসতাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ বলে মন্তব্য করেছে। সম্ভাব্য গণহত্যার অভিযোগ আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবিও উঠেছে। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমার। রাখাইনের সহিংসতা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা। এসব রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চলতি বছরে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে মিয়ানমার।

অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম নাইন নিউজ বলছে, আসন্ন সম্মেলনে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরাতে তড়িঘড়ি না করতে মিয়ানমারকে আহ্বান জানাবে সিডনি। সেভ দ্য চিলড্রেন অস্ট্রেলিয়ার মুখপাত্র ম্যাট টিঙ্কলার সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, এই সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী টার্নবুল ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী জুলি বিশপকে মিয়ানমারের সহিংসতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশের সুযোগ দেবে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে আসিয়ান সদস্যভুক্ত দেশ ও অস্ট্রেলিয়াকে চলমান রোহিঙ্গা ইস্যুতে শক্ত ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে রাখাইনে মানবতাবিরোধী অপরাধ চলছে বলেও দাবি করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে। এছাড়া বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি বলেছে, অস্ট্রেলিয়ার ‘বেআইনি ও নিষ্ঠুর’ শরণার্থী নীতির ইতি ঘটাতে আসিয়ান দেশগুলোর চাপ দেওয়া উচিত।

আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার এই যৌথ সম্মেলনের মাধ্যমে সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সম্মেলন আয়োজনকারীরা। এই সম্মেলনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক বন্ধন সুদৃঢ়, রাজনৈতিক আলোচনা, পারস্পারিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধিতে পারস্পারিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে বলেও আশা করা হয়েছে ওই ওয়েবসাইটে।