নিউ ইয়র্কে আবারও পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারালেন নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ

নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে আবার এক নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তিকে গুলি করেছে দেশটির পুলিশ। বুধবার এক ফোনকলে সেখানে গিয়ে উপস্থিত হয় পুলিশ। তার হাতে থাকা পাইপকে বন্দুক মনে করে গুলি চালানো হয় বলে দাবি করে পুলিশ।

এই বস্তুটিকেই বন্দুক ভেবেছিল পুলিশ

যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের নির্বিচারি কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার ধারাবাহিক সংস্কৃতি বিরাজমান। একইভাবে নির্বিচারি পুলিশি দায়মুক্তিও সেখানে সাধারণ ঘটনা।তবে ২০১৪ সালে উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে পুলিশ কর্তৃক এক কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার ঘটনায় উত্তাল বিক্ষোভ হয়। অঙ্গরাজ্যের মিলওয়াউকি নামের শহরে ডন্ট্রে হ্যামিলটন নামে এক নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জোরালো বিক্ষোভ সত্ত্বেও জড়িত পুলিশকে দায়মুক্তি দেওয়া হয়। পরে একই ধরনের অন্যান্য ঘটনায় বিক্ষোভ হলেও পরিস্থিতির বদল ঘটেনি। সর্বশেষ সাক্রামেন্টোতে স্টিফেন ক্লার্ককে হত্যার ঘটনায় আবারও ফুঁসে উঠেছিল জনগণ। দায়ী দুই সদস্যকে ছুটিতে পাঠিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছে পুলিশ।

নিউ ইয়র্ক পুলিশ প্রধান তেরেন্স এ মোনাহান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ৯১১ এ কল করে পুলিশকে ডাকা হয়েছিল। ফোন দিয়ে তাদের জানানো হয় যে ওই ব্যক্তির কাছে অস্ত্র আছে বলে শঙ্কা করছেন তারা।

মোনাহান বলেন, ‘আজ বিকেল ৪টা ৪০ এর দিকে নিউ ইয়র্ক পুলিশের কাছে বেশ কয়েকটি ফোনকল আসে। আমাদের বলা হয় যে একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি বাদামি রঙের জ্যাকেট পড়ে একটি রুপালি রংয়ের অস্ত্র তাক করছে পথচারীর দিকে।’

ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর ওই বিবরণে এক ব্যক্তিতে তারা দেখতে পান বলে জানান মোনাহান। তাদের দাবি এসময় ওই ব্যক্তি পুলিশের দিকে একটি বস্তু তাক করেছিলেন। চারজন পুলিশ ১০ রাউন্ড গুলি চালিয়ে তাকে নিবৃত্ত করে।

এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করে ডাক্তার। পুলিশ এখনও তার বিস্তারিত পরিচয় দেয়নি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ওই ব্যক্তি এলাকায় খুবই পরিচত।

পুলিশ জানায়, তাদের দিকে তাক করে রাখা বস্তুটি একটি পাইপ। কোনও পুলিশ সদস্যের কাছেই বডি ক্যামেরা ছিল না।  

বুধবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে অনেক স্থানীয় জড়ো হন। পুলিশের এমন আচরণে সবাই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নিউ ইয়র্কের মেয়র বিল দে ব্লাসিওর অফিস থেকে জানানো হয়, তিনি এই গোলাগুলি সম্পর্কে অবগত।

দুই সপ্তাহ আগেই স্টিফেন ক্লার্ক নামে এক কৃষ্ণাঙ্গকে গুলি করে হত্যা করেছিল পুলিশ। তার হাতে থাকা মোবাইল ফোনকে অস্ত্র ভেবে আটবার গুলি করেছিলো পুলিশ।