যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন নিয়ে টেলিফোনে ভারতকে সতর্ক করলো পাকিস্তান

নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন নিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। দোষারোপের খেলায় না মেতে দেশটিকে নিজেদের দিকে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিল চৌহানের সঙ্গে এক ফোনালাপে পাকিস্তানি ডিরেক্টর জেনারেল মিলিটারি অপারেশনস মেজর জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা এসব সতর্কতা দেন। পাকিস্তানের দাবি, নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের কারণে বিদ্যমান উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। সেইসঙ্গে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে বসবাসরত সাধারণ জনগণকে দুর্দশায় পড়তে হচ্ছে। নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে বসবাসরতদের মধ্যে ২১৯ জন এ বছর ভারতীয় বাহিনীর শেল হামলার শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ করা হয়।

ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত

প্রায়ই ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে গোলাগুলি ও যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের জন্য দুই দেশ একে অপরকে দোষারোপ করে থাকে। দুই দেশই আলাদা আলাদা করে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পরিসংখ্যান হাজির করে থাকে। ২০১৪ সালে ভারত সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৫৮৩টি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। একই সময়ে ভারতের বিরুদ্ধে ৩১৫টি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে পাকিস্তান। ২০১৭ সালে ভারত সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৫৮৩টি এবং পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ ভারতের বিরুদ্ধে ১৯৭০টি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনে। এ বছরের প্রথম মাসেই ভারত ১৯২টি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। বিপরীত দিক থেকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরের হিসাবে এ বছর এখন পর্যন্ত ভারতের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের সংখ্যা ১ হাজারের বেশি।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন জানায়, শুক্রবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় পাকিস্তানি ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল অনিল চৌহান এবং পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জার মধ্যে হটলাইনে আলাপ হয়। সাহির শামশাদের অনুরোধেই আয়োজিত হয় অনির্ধারিত এ হটলাইন আলাপ। তবে এ আলাপনের খবরটি জানিয়ে পাকিস্তানি আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দফতরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয় একদিন পর।

শনিবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দেওয়া ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ২৭ এপ্রিল পাকিস্তানি ও ভারতীয় ডিজিএমও (ডিরেক্টর জেনারেল মিলিটারি অপারেশনস)-এর মধ্যে হটলাইনে যোগাযোগ হয়েছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ডিজিএমও নিয়ন্ত্রণরেখায়/ওয়ার্কিং বাউন্ডারিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ইস্যুটি নিয়ে আলাপ করেছেন। নিয়ন্ত্রণরেখা/ওয়ার্কিং বাউন্ডারি দিয়ে অনুপ্রবেশের মিথ্যা অজুহাতে ভারতীয় সেনাবাহিনী নিরপরাধ বেসামরিক ব্যক্তিদের ইচ্ছাকৃতভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।’

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগবিষয়ক শাখার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছর এ পর্যন্ত ২১৯ জন নিরপরাধ ব্যক্তিকে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের কারণে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করা হয়।

শুক্রবার হটলাইন আলাপে মেজর জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা বলেন, ভারতীয় পক্ষকে দোষারোপের খেলায় না মেতে নিজেদের অভ্যন্তরে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।