ভারতের ঝাড়খণ্ডে কিশোরীকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যা

ভারতের ঝাড়খণ্ডে এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রাম পঞ্চায়েতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর তাকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে ধর্ষণকারী ও তাদের সহযোগীরা। তার আগে ওই কিশোরীর বাবা-মাকেও ব্যাপক মারধর করা হয়। এ ঘটনায় শনিবার ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

_101182159_936ed766-6611-46f1-a7ef-f23214bae107

পুলিশ জানায়, ঝাড়খণ্ডের চাত্রা জেলার রাজাতেনদুয়া গ্রামে কয়েকদিন আগে ওই কিশোরীকে বাড়িতে রেখে এক আত্মীয়ের বিয়েতে যান তার বাবা-মা। ওই সময় গ্রামের দুই ব্যক্তি মেয়েটিকে অপহরণ করে পাশের বনে নিয়ে ধর্ষণ করে। তার বাবা-মা ফিরে এসে ঘটনাটি জানতে পেরে গ্রাম পঞ্চায়েতে অভিযোগ করেন। পঞ্চায়েতের বিচারে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় তাদের ১০০ বার কান ধরে ওঠা-বসার পাশাপাশি ৫০ হাজার রুপি জরিমানা করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা বিচার মানতে অস্বীকৃতি জানায়। নিজেদের লোকজন নিয়ে তারা ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা-মায়ের ওপর হামলা চালায়। ওই কয়েকজন গিয়ে ওই কিশোরীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অশোক রাম ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, মেয়েটিকে দুইজন ধর্ষণ করেছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত ১৮ আসামির মধ্যে ১৪ জন শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছে। বোকারো্ পুলিশ মহাপরিদর্শক শম্ভু ঠাকুর হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন, ঘটনার মূল দুই আসামি একজনকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি।

গ্রাম পঞ্চায়েতের বিচার কোনও আইনী ভিত্তি না থাকলেও ভারতে গ্রামীন অঞ্চলগুলোতে এর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। অনেকেই ভারতের ব্যয়বহুল বিচার ব্যবস্থার পরিবর্তে পঞ্চায়েতের মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করাকে সহজ মনে করেন। তবে অনেক সময় পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে বেআইনি নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি প্রমাণ বিকৃতির অভিযোগ উঠে থাকে।

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে শিশু আসিফাকে অপহরণের পর ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় এমনিতে অনেক সমালোচনা হচ্ছে। এরই মধ্যে এই ঘটনা ঘটলো। দেশটিতে ২০১৬ সালে প্রায় ৪০ হাজার ধর্ষণ মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। তবে বেশিরভাগ সময়ই সামাজিক কলঙ্কের ভয়ে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করা থেকে বিরত থাকেন।

সর্বশেষ ঝাড়খণ্ডের এই ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবার দাস তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এ জঘন্য ঘটনায় তিনি বিস্মিত হয়েছেন। তিনি বলেন, এই সব ঘৃণ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের সমাজে কোনও স্থান নেই। তাদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। বিবৃতিতে তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। সূত্র: বিবিসি, টাইমস অব ইন্ডিয়া।