মঙ্গলের ভূকম্পন পরীক্ষায় নাসার নতুন অভিযান

মঙ্গলগ্রহে নতুন অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ সংস্থা নাসা। ‘ইনসাইট’ নামে এই অভিযানে প্রথমবারের মতো লাল গ্রহটির অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে পরীক্ষা চালানো হবে। এবার নভোযানটির মাধ্যমে মঙ্গলগ্রহের ভূপৃষ্ঠে সিসমোমিটার স্থাপন করা হবে যার মাধ্যমে সেখানকার ভূ-কম্পন রেকর্ড করা হবে। নভোযানটি আগামী নভেম্বর মাসে মঙ্গলের মাটি স্পর্শ করবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

মঙ্গলগ্রহে ‘ইনসাইট’ অভিযানের কল্পিত ছবি

মঙ্গলগ্রহের ভূ-কম্পন বিশ্লেষণের মাধ্যমে সেখানকার অভ্যন্তরীণ শিলা স্তর সম্পর্কে জানা যাবে। এর ফলে আনুমানিক ৪৬০ কোটি বছর আগে সৃষ্ট গ্রহটির সঙ্গে পৃথিবীর তুলনামূলক চিত্র পাওয়া যাবে।

ইনসাইট অভিযানের প্রধান তদন্তকারী ড. ব্রুস বানের্দত বলেন, ভূকম্পীয় তরঙ্গ গ্রহটির অভ্যন্তরে প্রবেশ করার মাধ্যমে শিলা স্তর সম্পর্কে তথ্য প্রদান করবে। বিভিন্ন শিলাস্তরে এটা আলাদা তথ্য দেবে। তিনি আরও বলেন, সিসমোমিটারে আপনি এসব তরঙ্গ দেখতে পারবেন। বিজ্ঞানীরা এসব তরঙ্গ থেকে তথ্য বুঝতে পারেন। মঙ্গলগ্রহের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক অনেক ভূমিকম্পের তথ্য সংগ্রহ করার পর তা একত্র করে গ্রহটির একটি ত্রিমাত্রিক অভ্যন্তরীণ চিত্র পাব।

উৎক্ষেপণের আগে ‘ইনসাইট’

শনিবার আকাশে ঘন কুয়াশা থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ভানদেনবার্গ বিমান বাহিনী ঘাঁটি থেকে স্থানীয় সময় ৪টা ৫ মিনিটে একটি অ্যাটলাস নভোযান উড্ডয়ন করে। নাসা এর আগে ৭০ এর দশকে মঙ্গলগ্রহে সিসমোমিটার পাঠিয়েছিল। কিন্তু ওই অভিযানে ভূমির কম্পন বুঝতে ব্যর্থ হতে হয়। কারণে তখন যন্ত্রটি নভোযানের ভেতর স্থাপন করা হয়েছিল। ওই সময় যন্ত্রটিতে যা রেকর্ড করা হয়েছিল তা ছিল নভোযানে ঝাঁকুনি ও বাতাসের শব্দ। এবার ইনসাইট অভিযানে সিসমোমিটারকে সরাসরি মঙ্গলগ্রহের মাটিতে স্থাপন করা হবে।

file-20180406-125187-1k9h41

তবে এই অভিযানে বছরে কতগুলো ভূমিকম্প নির্ণয় করা যাবে তা অনিশ্চিত। তবে আনুমানিক ২৫ বারের  মতো ভূমিকম্প রেকর্ড করা সম্ভব হবে। এর মধ্যে সম্ভবত অনেকগুলোই হবে খুব ছোট। যেমন তিন মাত্রার ভূমিকম্প হলে পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ টেরই পায় না। তবে এসব মৃদু ভূ-কম্পন থেকেও সিসমোমিটার পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে যা দিয়ে বিজ্ঞানীরা মঙ্গলগ্রহের অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পকে একটি মডেল দাঁড় করাতে পারবে।