সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ যত বন্দুক হামলা

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস রাজ্যের  সান্তা ফে নামের একটি হাই স্কুলে শুক্রবার বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। গত ৮ দিনে এটি যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে ঘটা তৃতীয় বন্দুক হামলার ঘটনা। এর আগে বুধবার ইলিনয়ের ডিক্সন হাই স্কুলের গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিপর্বে গুলি চালিয়ে এক কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছিল। ওই ঘটনায়  মারাত্মক আহত হন বিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্র।  এছাড়া গত ১১ মে ক্যালিফোর্নিয়ার পালমাডেলে ১৪ বছরের এক কিশোর হাইল্যান্ড স্কুলে আধা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি ছোঁড়া শুরু করেছিল। ওই ঘটনায় একজন আহত হয়েছিলেন একজন।

390c4b86ac972d97e7b677c402b917e81a081dcd

২০১৮ সালে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১০১টি বন্দুক হামলায় ১২৫ জন নিহতের খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বন্দুক হামলার ঘটনা পর্যবেক্ষণ করা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান গান ভায়োলেন্স মনে করে, প্রকৃত নিহতের সংখ্যা আরও বেশি। জরিপকারী সংস্থা পলিফ্যাক্টের তথ্য অনুসারে, ১৯৬৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বন্দুক বা পিস্তলের গুলিতে যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ লাখ মানুষ নিহত হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীর হামলায় নিয়মিত নিহতের ঘটনা ঘটলেও বেশ কয়েকটি হামলা ছিল বেশ ভয়াবহ। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি তুলে ধরেছে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ সব বন্দুক হামলার ঘটনা।

১. ভেগাস কনসার্ট (১ অক্টোবর, ২০১৭)

২০১৭ সালে ১ অক্টোবর লাস ভেগাস শহরের একটি হোটেলে আয়োজিত কনসার্টে বন্দুকধারীর হামলায় ৫০ জন নিহত হওয়ার ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বন্দুক হামলা বলে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীর হামলায় এতো বেশি সংখ্যক প্রাণহানি আগে হয়নি। এ ঘটনায় আহত হয়েছিলেন ৫৫০ জন।

২. ওরল্যান্ডো নাইটক্লাব, ফ্লোরিডা (১২ জুন, ২০১৬)

ওরল্যান্ডোর সমকামীদের নাইটক্লাব পাল্স এ হামলা চালান আফগান বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ওমর মতিন। এ হামলায় নিহত হন ৫০ জন ও আহত ৫৩ জন। সোয়াট টিমের অভিযানের সময় বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ওমর মতিন। এটাই যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা। 

৩.  ভার্জিনিয়া টেক (১৬ এপ্রিল, ২০০৭)

২৩ বছরের ইংরেজ মেজর ভার্জিনিয়ার সেন্টার ভিলের ভার্জিনিয়া টেকের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে গুলিবর্ষণ করেন। এতে নিহত ৩২ জন ও আহত ১৭ জন। সিউং-হুই চো নামক ওই বন্দুকধারী নিজেও আত্মহত্যা করেন।

৪. স্যান্ডি হুক এলিমেন্টারি স্কুল, নিউটাউন, কানেক্টিকাট (১৪ ডিসেম্বর ২০১২)

অ্যাডাম ল্যানজা নামক ব্যক্তি স্যান্ডি হুক এলিমেন্টারি স্কুলে প্রবেশ করে গুলিবর্ষণ শুরু করেন। এতে ২৬ জন নিহত হন। নিহতের বেশিরভাগই ছিল শিশু। গুলিবর্ষণের পর নিজেও আত্মহত্যা করেন। এর আগে অ্যাডাম নিজের মা ন্যান্সিকেও হত্যা করেন।

৫. টেক্সাসে গির্জায় হামলা (৫ নভেম্বর, ২০১৭)

গত বছরের শেষদিকে টেক্সাসে এক  গির্জায় হামলা চালায় বন্দুকধারী। ৫ নভেম্বর স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে (বাংলাদেশ সময় রাত) এ ঘটনা ঘটে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে ওই বন্দুকধারী। তবে এর আগে তার গুলিতে প্রাণ হারান ২৬ জন। আর আহত হন ২০ জন।

৬. ফ্লোরিডা হাই স্কুল (১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮)

চলতি বছর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হয় ফ্লোরিডা হাইস্কুলে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ফ্লোরিডার ফোর্ট লডারডেলের মারজোরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলে বন্দুক হামলা চালানো হয়। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে গোলাগুলির পর হামলাকারী হিসেবে আটক করা হয় স্কুলটির সাবেক ছাত্র নিকোলাস ক্রুজকে। তার গুলিতে প্রাণ হারায় ১৪ শিক্ষার্থী ও তিনজন স্কুল কর্মী।

৭. সান বারডিনো সেবাকেন্দ্র, ক্যালিফোর্নিয়া (২ ডিসেম্বর ২০১৫)

ক্যালিফোর্নিয়ায় এক অফিস পার্টিতে মুসলিম দম্পতির গুলিতে প্রাণ হারান ১৪জন। সৈয়দ ফারুক (২৮) ও তাশফিন মালিক (২৭) দম্পতি সেবাকেন্দ্রে প্রবেশ করে ১৪ জনকে হত্যা করেন। পুলিশের গুলিতে দম্পতি নিহত হন।