পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে রাশিয়ায় মোদি: আলোচনায় মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের আশা প্রকাশ করে রাশিয়া সফর শুরু করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার (২১ মে) রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করতে সোচিতে পৌঁছান তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, এদিনই সোচিতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন মোদি। আর বৈঠকে আলোচনা হবে ভারত-রাশিয়া প্রতিরক্ষা সম্পর্ককে কেন্দ্র করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি এবং ইরান পারমাণবিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার প্রভাবসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক ইস্যু।

নরেন্দ্র মোদি
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ এইটিনের প্রতিবেদনে বলা হয়, মোদি-পুতিন বৈঠকে প্রতিরক্ষা চুক্তির ইস্যুগুলো প্রাধান্য পাবে। রাশিয়ার কাছ থেকে পাঁচটি এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ সিস্টেম ও একটি মিসাইল অ্যারে কেনার পরিকল্পনা করছে ভারত। গোটা চুক্তিতে ৬০০ কোটি ডলার খরচ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চুক্তিগুলো এমন সময়ে হচ্ছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার কাছ থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জামাদি কেনা নিয়ে মিত্রদের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে।  

আরেক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড জানায়, শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভারতসহ বন্ধু রাষ্ট্রদের সতর্ক করা হয়েছে। বলা হয়েছে, রাশিয়ার কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য কিছু কেনার আগে তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধের কথা মাথায় রাখতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক-সামরিক বিষয়ক মুখ্য উপ-সহকারী মন্ত্রী টিনা কাইদানো বলেন, ‘আমি আশা করছি কেবল ভারতই নয়, আমরা যাদের সঙ্গে জড়িত তাদের সবাইকে বুঝতে হবে রাশিয়ার কাছ থেকে বড় ধরনের প্রতিরক্ষা ক্রয় করা হলে সে বিষয়টিকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে মূল্যায়ন করবো। কারণ, আমাদের বিদ্যমান আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা আছে। অবশ্য ভারতও বলে দিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তারা কোনও তৃতীয় দেশের নির্দেশনা অনুমোদন করবে না।

মোদি ও পুতিন (ফাইল ফটো)
সংশ্লিষ্ট মার্কিন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে নিউজ এইটিন জানায়, রাশিয়ার কাছ থেকে ভারত প্রতিরক্ষা সরঞ্জামাদি কিনলে স্যাংকশন অ্যাক্ট (সিএএটিএসএ)-এর আওতায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। ২০১৭ সালে স্যাংকশন অ্যাক্টকে আইনে পরিণত করতে স্বাক্ষর করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আইনটি কার্যকর হয়েছে।

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)-এর সমর্থক পুতিন। চীন ও রাশিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে জোটবদ্ধ না হলেও তাদের শত্রু ও মিত্র অভিন্ন। রাশিয়ার সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের বিষয়টিও নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে ভারত। ইসলামাবাদ এবং মস্কো প্রতিরক্ষা সম্পর্ক উন্নয়নের অঙ্গীকার করেছে। সম্প্রতি পাকিস্তানের সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়াও রাশিয়ার চিফ অব দ্য জেনারেল স্টাফের সঙ্গে দেখা করেছেন।  

তবে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে আশাবাদী ভারত। রাশিয়ায় যাওয়ার আগে ভারতে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘রাশিয়ার বন্ধুসুলভ নাগরিকদের শুভেচ্ছা জানাই। প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের দিকে তাকিয়ে আছি। তার সঙ্গে যতবার দেখা হয়েছে, সবসময় ভালো লেগেছে। এই বৈঠকের মাধ্যমে দুদেশের সম্পর্কের আরও উন্নতি হবে বলেই আশা করি।’