উত্তরের প্রতি নমনীয় হচ্ছে দ. কোরিয়া, যৌথ মহড়া পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিত

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম উন জং-এর মধ্যে সমঝোতা চুক্তির ধারাবাহিকতায় উত্তর কোরিয়ার প্রতি নমনীয় হওয়ার আভাস দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন বলেছেন, উত্তর পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে আন্তরিক হলে সিউলের পক্ষ থেকে সামরিক চাপ প্রয়োগের ক্ষেত্রেও নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করা হবে। যৌথ সামরিক মহড়া বন্ধের ব্যাপারে ট্রাম্পের ঘোষণার ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) তিনি বলেন, প্রয়োজনে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক
এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ৬৫ বছরের অচলায়তন ঘুচিয়ে বৈঠকে বসেন দুই কোরিয়ার শীর্ষ নেতা। সীমান্তবর্তী যুদ্ধবিরতি অঞ্চল পানমুনজামে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে আলোচনা হয়। কিম গত বছরের ধারাবাহিকতায় পারমাণবিক পরীক্ষা না চালানোর প্রতিশ্রুতি দেন। কিমের প্রতিশ্রুতিকে ‘খুবই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত’ আখ্যা দিয়ে মুন বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববাসীর জন্য একটি উপহার’। বৈঠক শেষে দক্ষিণ কোরীয় মুখপাত্র দুই পক্ষের বৈঠককে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ ও আনন্দদায়ক’ আখ্যা দেন। এপিলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কিমের সঙ্গে সমঝোতার প্রসঙ্গ টেনে বৃহস্পতিবার মুন জায়ে ইন বলেন, ‘যদি উত্তর কোরিয়া আন্তরিকভাবে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে পদক্ষেপ নেয় এবং দ্বন্দ্ব নিরসনে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যদি উত্তর কোরিয়ার আলোচনা ভালোভাবে হয়, তবে পানমুনজাম ঘোষণা মানার জন্য উত্তর কোরিয়ার ওপর সামরিক চাপ প্রয়োগে নমনীয় হওয়া জরুরি।’

গত ১২ জুন সিঙ্গাপুরে উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকে দক্ষিণ কোরিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সামরিক মহড়া স্থগিতের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। সংশ্লিষ্ট সূত্রকে উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, ঘোষণা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। সিএনএন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আগস্টে অনুষ্ঠিতব্য সামরিক মহড়া স্থগিতের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারেন ট্রাম্প। সেই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতেও মহড়া স্থগিতের ইঙ্গিত দেওয়া হয়। মুন জায়ে ইন-এর বিবৃতিতে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া চালানোর কথা সতর্কভাবে বিবেচনা করবে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে সহযোগিতা দিতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩০ হাজার সেনা রয়েছে। প্রতি বছর তাদের পরিবর্তন করা হয়ে। প্রশান্ত মহাসাগরের গুয়াম ঘাঁটি থেকে তারা বড় ধরনের সামরিক মহড়া চালায়। উত্তর কোরিয়া এই বার্ষিক মহড়াকে আগ্রাসনের প্রস্তুতি বলে বিবেচনা করে। আর দক্ষিণ কোরিয়ার দাবি এটা তাদের আত্মরক্ষামূলক কার্যক্রম। সিঙ্গাপুরের সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, এই মহড়া বন্ধ করলে ‘অনেক টাকা বাঁচবে’। তবে উত্তর কোরিয়া যদি সহযোগিতামূলক আচরণ বন্ধ করে দেয় তবে আবারও মহড়া চালাবেন তারা।