মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ন্যাটো সম্মেলনে মিত্র দেশগুলোকে সামরিক ব্যয় বাড়ানোর তাগিদ দেওয়ার পর দ্বিতীয় দিনের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে আফগান সংকট। সম্মেলনের আগেই ন্যাটো মহাসচিব জিন্স স্টোলটেনবার্গ থেকে শুরু করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে পর্যন্ত কথা বলেছেন দেশটির পরিস্থিতি নিয়ে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে জানা গেছে, দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় দীর্ঘমেয়াদি আফগান যুদ্ধ নিরসনের ব্যাপারে আলোচনা করবেন এই সামরিক জোটের নেতারা।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে আফগান বাহিনীর সহায়তায় দেশটিতে অতিরিক্ত আরও তিন হাজার সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে থেকে দেশটিতে মোতায়েন রয়েছে আরও ১২ হাজার মার্কিন সেনা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে সম্মেলনের প্রথম দিন বুধবারই নিশ্চিত করেছেন যে, তার দেশ আফগানিস্তানে আরও ৪৪০ সেনা মোতায়েন করবে। দৃশ্যত, যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানকে আরও সহযোগিতা দিতে ট্রাম্পের অনুরোধে সাড়া দিয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্য। এর ফলে আফগানিস্তানে বর্তমানে থাকা ব্রিটিশ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বেড়ে এক হাজার ১০০-তে উন্নীত হবে। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী গেভিন উইলিয়ামসন জানিয়েছেন, নতুন করে মোতায়েন হতে যাওয়া ৪৪০ জন যুক্তরাজ্যের ওয়েলশ গার্ড রেজিমেন্টের সদস্য। তিনি বলেন, দুনিয়ার যে কোনও প্রান্ত থেকে ডাক আসুক না কেন যুক্তরাজ্য তার মিত্রদের সহায়তায় সবার অগ্রভাগে থাকবে।
সম্মেলনের প্রথম দিনে ন্যাটো মহাসচিব জিন্স স্টোলটেনবার্গ আশা প্রকাশ করেন, পশ্চিমা এই সামরিক জোট ২০২৪ সাল পর্যন্ত আফগান নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর জন্য তহবিল যোগাতে সম্মত হবে। বৃহস্পতিবার সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি হাজির থাকার কথা রয়েছে।
সম্মেলনের প্রথম দিনে ২৯টি দেশের এই জোটের সদস্য দেশগুলোকে নিজেদের জিডিপি’র (গ্রস ডমেস্টিক প্রডাক্ট) চার শতাংশ পর্যন্ত ব্যয় বাড়াতে বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে জোটের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে সদস্য দেশগুলোর জিডিপির ২ শতাংশ ব্যয় বাড়ানো। দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় ইউরোপের দুই দেশ জর্জিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে ন্যাটোর সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে জোট নেতাদের। দুই দেশই পশ্চিমা এ সামরিক জোটে যোগ দিতে আগ্রহী। তবে এ ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য কোনও অগ্রগতি হয়নি। এর মূল কারণ দেশগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার ভূখণ্ডগত জটিলতা। ন্যাটোর নিয়ম অনুযায়ী ভূখণ্ডগত সংঘাত রয়েছে এমন দেশ সামরিক জোটটিতে যোগ দিতে পারে না। তবে এ অঞ্চলের আরেক দেশ মেসিডোনিয়া বুধবার জোটে যোগদান সম্পর্কিত আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছে।