শতাব্দীর দীর্ঘতম চন্দ্রগ্রহণের সাক্ষী হলো বিশ্ববাসী। প্রত্যক্ষ করেছে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো। শতাব্দীর দীর্ঘতম পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের কারণে পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ একদিকে রক্তিম হয়ে উঠেছিল। অন্যদিকে তাকে সঙ্গ দিতে একপর্যায়ে হাজির হয় সৌরজগতের লাল গ্রহ মঙ্গল। নাসা জানিয়েছে, বুধবারের গ্রহণ স্থায়ী হয়েছিল ১ ঘণ্টা ৪২ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড। কোথাও কোথাও তা প্রায় ৪ ঘণ্টাও স্থায়ী হয়।
সূর্য, পৃথিবী ও চাঁদ কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে একই সরলরেখায় চলে এলে গ্রহণ হয়। সে সময় পৃথিবী যদি চাঁদ ও সূর্যের মধ্যিখানে থাকে, তখন চাঁদ পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা পড়ে যায়। এই বাস্তবতাকেই চন্দ্রগ্রহণ বলা হয়। চাঁদের ওপর পৃথিবীর ছায়া পড়লে গ্রহণ হয়, তবে চাদ তথনও পুরোপুরি অন্ধকারে ঢেকে যায় না। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভেদ করে তখনও চাঁদের ওপর সূর্যের কিছুটা আলো পড়ে। এ ক্ষেত্রে বায়ুমণ্ডলে সূর্যের বেশির ভাগ আলো প্রতিফলিত বা শোষিত হলেও লাল রঙের আলো ঠিকই পৌঁছে যায় চাঁদে। ফলে এটি রক্তাভ হয়ে ওঠে। গতকাল রাতে ঠিক এই ঘটনাই ঘটেছে, আর সেজন্যই ব্লাড মুন দেখা গেছে।
চন্দ্রগ্রহণের সময় পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা পড়ে চাঁদ। পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ সময় পৃথিবীর ছায়ায় পুরোটাই ঢেকে যায়। সূর্য থেকে আলো পৌঁছায় না। ভারতের বেঙ্গালুরুর দৃশ্য, ধীরে ধীরে অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে চাঁদ।
ধীরে ধীরে রং ঢেকে যায় চাঁদ। ভারতের আমেদাবাদ থেকে দেখা গেছে চন্দ্রগ্রহণ।
কলকাতা শহরের ঐকতান হাউসিং সোসাইটির আনন্দধারা অ্যাপার্টমেন্টের ছাদে জড়ো হয়েছিলেন সবাই। কিন্তু বাদ সাধল মেঘ। টানা বৃষ্টি আর মেঘলা আকাশের জেরে খুব একটা ভাল দেখা মেলেনি চাঁদমামার।
ব্লাড মুনের এই ছবি ধরা পড়েছে মিসরের কায়রোতে।
দীর্ঘতম এই মহাজাগতিক গ্রহণ ১ ঘণ্টা ৪৩ মিনিট ধরে চলে গ্রহণ। আবু-ধাবি থেকে ধরা পড়েছে এই ছবি।
পৃথিবীর কোনও কোনও অঞ্চল থেকে লক্ষ্য করা যায় লাল রঙের চাঁদ। ইজরায়েলের অ্যাশকেলন শহরে ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সেই `ব্লাড মুন`
সারা বিশ্বের সঙ্গে ভারতের মানুষও সাক্ষী রইল সেই মহাজাগতিক ঘটনার। ভারতের চেন্নাইয়ে ধরা পড়েছে চন্দ্রগ্রহণের ছবি। নাসা আভাস দিয়েছে, সূর্যের পুরো আলোই মঙ্গলে পড়ায় জুলাইয়ের ২৭-৩১ তারিখ পর্যন্ত মঙ্গলগ্রহ সম্পূর্ণ দৃশ্যমান থাকবে। আর পৃথিবী থেকে তা পরিষ্কার দেখা যাবে। ৩১ জুলাই মঙ্গল থেকে পৃথিবীর দূরত্ব থাকবে ৩৫.৮ মিলিয়ন মাইল।