প্রবীণদের একাকিত্ব ঘুচাতে অনন্য উদ্যোগ ‘বড়দের স্কুল’

টকটকে লাল ও সাদা ইউনিফর্ম পরা পুনশ্রী সেয়াংনুয়াল খুব যত্ন করে চুলে বেণী করেছেন। স্কুলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে বাসে জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি। বাস আসার পর ৬৩ বছর বয়সী এই নারী তার ৬০ থেকে ৭০ বছর বয়সী বন্ধুদের সঙ্গে স্কুলের দিকে রওনা হন। থাইল্যান্ডের চিয়াং রাক নোই জেলায় তাদের জন্য এই স্কুল খোলা হয়েছে। আর তাতে ভর্তি হওয়া শুরু করেছেন সেয়াংনুয়াল ও তার সহপাঠীদের মতো দেশটির আরও অনেক মানুষ। মূলত একাকিত্ব থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্যই বয়স্কদের জন্য এমন স্কুলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

feat-1

প্রতিবেশী অনেক দেশের তুলনায় থাইল্যান্ডে বৃদ্ধ মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৪০ সালের মধ্যে পূর্ব এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে এখানে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধ মানুষ থাকবে। এসব বৃদ্ধ মানুষেরা চরম মাত্রায় একাকিত্বে ভুগে থাকেন। তাই তাদের সহায়তা করার জন্য এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেখানে তারা বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মেশার সুযোগ পান। প্রাণবন্ত আড্ডার পাশাপাশি তাদের জন্য হাসি-ঠাট্টায় মেতে ওঠারও সুযোগ করে দিয়েছে এই স্কুল।

বয়স্কদের এই স্কুলের শিক্ষার্থী সেয়াংনুয়াল বলেন, ‘আমি সত্যিই স্কুলে যাওয়া পছন্দ করি। আমি জ্ঞান অর্জন করছি আর এটা সত্যিই মজার। আমার অনেক বন্ধু আছে, আমি অনেক মানুষ সম্পর্কে জানতে পারছি।’

স্কুলের আরেক ছাত্রী ৭৭ বছর বয়সী সোমজিত তিরারোজ। ৪০ বছর বয়সে স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে তিনি একা রয়েছেন। তিনি জানান, তার ছেলে-মেয়েরা মাঝে মাঝে তাকে দেখতে আসেন। কিন্তু একাকিত্ব কাটাতে এই স্কুল তাকে দারুণ সহায়তা করেছে।

তিরারোজ বলেন, ‘আমি প্রত্যেক বুধবারের জন্য অপেক্ষায় থাকি।’ সপ্তাহে এই একদিনই তিনি স্কুল শিক্ষার্থীদের মতো করে পোশাক পরে স্কুলে যান। তিনি বলেন, ‘সেখানে আমরা একসঙ্গে কথা বলি ও হাসতে পারি।’