তামিল নাড়ুর পাঁচবারের মুখ্যমন্ত্রী করুনানিধির জীবনাবসান

নিরামিষভোজী ভারতীয় রাজনীতিবিদ মথুভেল করুনানিধি ৯৪ বছর বয়সে চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বয়সজনিত অসুস্থতায় বেশ কয়েকদিন ধরেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। পাঁচ মেয়াদে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিল নাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ১৯৬৯ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় রাজনীতিতেও ভূমিকা রেখেছেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বিপুল সংখ্যক সমর্থক রাস্তায় নেমে আসায় চেন্নাইয়ের নিরাপত্তা বাড়িয়েছে পুলিশ।মথুভেল করুনানিধি
স্কুল থেকে ঝরে পড়া করুনানিধি দক্ষিণ ভারতের চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লিখেও সুনাম কুড়িয়েছিলেন। ১৩ বার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। ভারতের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ১২টা ৪০  মিনিটে চেন্নাইয়ের কাভেরি হাসপাতাল করুনানিধির মৃত্যুর ঘোষণা দেয়।

আমৃত্যু রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন করুনানিধি। সর্বশেষ ২০১৬ সালে বিধান সভা নির্বাচনে দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বি জয়রাম জয়ললিতার বিরুদ্ধে নির্বাচন করেন তিনি। ওই নির্বাচনে জয়লাভ করে জয়ললিতা মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে কিছুদিন পর মারা যান। নতুন নির্বাচনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন এদাপ্পাদি কে. পালানিস্বামী।

ঈশ্বরে বিশ্বাস না করা করুনানিধি ছিলেন স্বঘোষিত যুক্তিবাদী। ১৯৪০’র দশকে দ্রাবিড়িয় আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক উত্থান ঘটে তার। উচ্চ বর্ণের ব্রাহ্মণদের চ্যালেঞ্জ করার সেই আন্দোলনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি তিনি হিন্দি ভাষা বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন।

স্বনামধন্য লেখক ও অনলবর্ষী বক্তা করুনানিধি তার বাগ্মিতা ও রসবোধের জন্য প্রচন্ড জনপ্রিয় ছিলেন। সমর্থকদের কাছে তিনি ঈশ্বরতুল্য মর্যাদা পেতেন।

করুনানিধির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। টুইটার বার্তায় তিনি লিখেছেন, আমরা এক সুদৃঢ় জননেতা, চিন্তাবিদ, পূর্ণাঙ্গ লেখককে হারালাম। এই অদম্য মানুষটি দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের জন্য তার জীবন ব্যয় করেছেন।

করুনানিধির জন্ম তামিল নাড়ুর থিরুভারুর জেলায় ১৯২৪ সালের ৩ জুন।। স্কুল থেকে ঝরে পড়ার পর দ্রাবিড়িয় আন্দোলনে যোগ দিয়ে ১৯৪৯ সালে রাজ্যে দ্রাবিড় মুন্নেত্রা কাজাঘাম (ডিএমকে)পার্টি গঠন হলে তার প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন তিনি। ১৩ বার নির্বাচনে অংশ নিয়ে সব বারই জয়লাভ করেন তিনি। পাঁচবার ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লেখার পাশাপাশি গল্প, কবিতা ও নাটক লিখতেন তিনি।