যুক্তরাষ্ট্র আমাদের আত্মসমর্পণ করানোর চেষ্টা করছে: ইরান

ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইসহাক জাহাঙ্গিরী বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের আত্মসমর্পণ করানোর চেষ্টা করছে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে তারা আমাদের সমাজের ওপর নানা ধরনের চাপ প্রয়োগ করতে চাইছে। তবে শত্রুদের ইরানের কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি।

nonameবুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে রুহানি বলেন, পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আলোচনার সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে। তারা এমন সব কাজ করেছে যার ফলে আলোচনার যাবতীয় পরিবেশ ধ্বংস হয়ে গেছে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, আলোচনার সেতু পুড়িয়ে দিয়ে আমেরিকা এখন অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। যদি তারা সৎ হয় তাহলে তারাই আবার সেই সেতু নির্মাণ করুক।

গত ৮ মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন। তবে ৩০ জুলাই তিনি ঘোষণা দেন, তার দেশ ইরানের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত। ট্রাম্পের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী মন্তব্য করেন, প্রতারক আমেরিকার সঙ্গে ইরান যুদ্ধ করবে না, আলোচনাও করবে না।

এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভি জানিয়েছে, স্থল ও আকাশপথে হামলায় সক্ষম নতুন প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে তেহরান। ভূমি থেকে ভূমিতে এবং জাহাজ থেকে সাগরের যে কোনও লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম নতুন এই অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রর নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফাহেত মোবিন’।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের প্রতিরক্ষা শিল্পের বার্ষিকীকে সামনে রেখে সোমবার তেহরানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির হাতামির উপস্থিতিতে এ ক্ষেপণাস্ত্র উদ্বোধন করা হয়। স্বল্প পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র রাডারসহ শত্রুপক্ষের যে কোনও ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিয়ে প্রতিকূল আবহওয়ার মধ্যেও লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। তবে এটি কত দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে তা জানানো হয়নি।

ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় প্রতিরক্ষা শিল্প উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। ‘ফাতেহ মোবিন’ ক্ষেপণাস্ত্রকে ঠেকানোর মতো প্রযুক্তি দুনিয়ার কারও কাছে নেই। সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি এ ক্ষেপণাস্ত্র বহু বছরের জন্য ইরানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

মিসাইলটিতে ‘সিকার হেড’ সংযুক্ত করা আছে, রয়েছে রাডার এড়িয়ে যাওয়ার সক্ষমতাও। হাতামি বলেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী হলো। তিনি বলেন, শত্রুপক্ষ আমাদের প্রতিরক্ষা শক্তি সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত। ইরান তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে কিছুতেই ছাড় দেবে না। সূত্র: রয়টার্স, পার্স টুডে।