শুল্ক আরোপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি ইউরোপীয় কমিশনের

নতুন করে শুল্ক আরোপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে ইউরোপীয় কমিশন। ইউরোপীয় কমিশনের মুখপাত্র ড্যানিয়েল রোজারিও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) উৎপাদিত পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করে তাহলে ইইউ-ও অবিলম্বে এর প্রতিক্রিয়া জানাবে। মঙ্গলবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

nonameড্যানিয়েল রোজারিও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি নতুন করে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে জবাব দিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নও প্রস্তুত রয়েছে।

এদিকে বাণিজ্য আলোচনা ত্বরান্বিত করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট জিন ক্লাউড জুনকারের বৈঠকের পর থেকেই চাপ দিয়ে যাচ্ছে দেশটি। দুইজন জার্মান ও একজন মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে যুক্তরাষ্ট্রের এ চাপ প্রয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত এমিলি হাবের সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘ট্রাম্প-জুনকার বৈঠকে ঐকমতের পর এই সপ্তাহে প্রথমবারের মতো একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা খুব দ্রুত ফলের জন্য চাপ দিচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, বর্তমান অবস্থায় ইইউ কর্মকর্তাদের জন্য একটি পরিষ্কার নির্দেশনা দরকার। আর ২০১৯ সালের মে মাসে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে।

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রে এক হাজারের বেশি কর্মসূচির পরিকল্পনা প্রকাশ অনুষ্ঠানে হাবের বলেন, ‘আমেরিকানরা খুব দ্রুত ফলাফলের জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘সময়সূচী অনুযায়ী আগামী বছর ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচন হবে। আর আমাদের এই নির্বাচনের আগেই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে।’

একজন মার্কিন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, কোনও নির্দিষ্ট তারিখ না জানালেও খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আলোচনা শুরু করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম ও অন্যান্য পণ্যের ওপর করারোপের বিষয়ে দুই পক্ষই আলোচনা শুরু করতে চায়। তাই জুনকারের সঙ্গে বৈঠকে ইউরোপীয় গাড়ির ওপর শুল্ক আরোপ না করতে রাজি হয়েছেন ট্রাম্প। এই বিস্ময়কর সমঝোতা দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের হুমকি হ্রাস করেছে। তবে আলোচনা মন্থর গতিতে হওয়ায় মার্কিন কর্মকর্তারা হতাশা প্রকাশ করেছেন। ইউরোপীয় ছুটির কারণে ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠকের পর তা স্থগিত করা হয়েছে। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মিউচিন গত মাসে বলেছেন, বিষয়টি খুব দ্রুত সমাধান হওয়ার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।

ইউরোপীয় কমিশনের একজন মুখপাত্রও গত সপ্তাহে ইইউ-যুক্তরাষ্ট্র ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠকের কথা নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু তিনি বিস্তারিত কোনও তথ্য জানাননি। জার্মান শিল্পগোষ্ঠী বিডিআই’র নির্বাহী পরিষদের সদস্য স্টিফেন মাইর জানিয়েছেন, নতুন ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠকে নির্দিষ্ট সময় সীমাসহ কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। মাইর বলেন, ‘আমরা জানি ট্রাম্প প্রশাসন সংক্ষিপ্ত সময় সীমা ও দ্রুততর অগ্রগতির জন্য প্রচণ্ড চাপ দিচ্ছে। কিন্তু আমরা বলেছি, পুরো ফলাফলের জন্য তাড়াহুড়ো করা উচিত হবে না। কারণ আমরা এমন একটি চুক্তি দেখতে আগ্রহী, যাতে শুধু শুল্ক নয়, ব্যবসায়িক সম্পর্ক বিঘ্নকারী অন্যান্য সাধারণ বিষয়ও থাকবে।