পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পশ্চিমবঙ্গ, সংঘর্ষে নিহত ৫

পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যটির উত্তর দিনাজপুর, পুরুলিয়া ও ২৪ পরগণা জেলায় সংঘর্ষে এরইমধ্যে ৫ জনের প্রাণহানির খবর জানা গেছে। নিহতদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের তিন সদস্য রয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ৩০ জন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ এইটিনের এক প্রতিবেদন থেকে হতাহতের এ সংখ্যা জানা গেছে।

পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ
গত মে মাসে ৮০ শতাংশ পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের কাজ শেষ হয়। বাকি ২০ শতাংশ বোর্ড গঠনের কাজ শুরু হয়েছে গত ২৪ আগস্ট থেকে। তৃণমূল কংগ্রেস যেসব আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছে, সেগুলোতে পুনঃনির্বাচন হবে না বলে সুপ্রিম কোর্টের রুল জারির পর এ কাজ শুরু হয়। তবে তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, কংগ্রেস ও সিপিআই (এম) এর সদস্য পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনে বাধা দিচ্ছে। আর এখান থেকেই উত্তেজনার সূত্রপাত।

উত্তর চব্বিশ পরগনার আমডাঙায় মঙ্গলবার তৃণমূল এবং সিপিএমের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৭ জন। সকলেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর জেরেই স্থগিত হয়েছে বোর্ড গঠন। বুধবার সকাল থেকেই থমথমে রয়েছে আমডাঙা। তৃণমূল জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে সিপিএম। 

পুরুলিয়ায় ঘাঘরায় পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন নিয়ে সংঘর্ষের সময় গুলিতে নিহত হয় দুই বিজেপি কর্মী। একজনের নাম নিরঞ্জন গোপ, অপরজনের নাম এখনও জানা যায়নি। অভিযোগ উঠেছে পুলিশের গুলিতে তাদের মৃত্যু হয়েছে। নিরঞ্জন ঘাঘরা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য ছিলেন।

উত্তর দিনাজপুরের বিভিন্ন জায়গায়ও ক্ষমতাসীন তৃণমূলের সঙ্গে বিরোধীদের সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষ হয় ইটাহারেও। পুড়িয়ে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়ি। ঘটনায় তিন পুলিশকর্মীসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ঘটনার জেরে চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে ইটাহার জুড়ে। মোট ২৫টি আসনের মধ্যে নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, বিজেপির দখলে ছিল ১১টি আসন। তৃণমূলের দখলে ছিল ৭টি আসন আর কংগ্রেস, সিপিএম ও নির্দলের দখলে ছিল ২ টি করে আসন এবং সিপিআইয়ের দখলে ছিল ১টি আসন। সূত্রকে উদ্ধৃত করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, এদিন সকালে বোর্ড গঠনের সময় বিজেপি ১৩টি আসনের সমর্থন ও তৃণমূল ১২টি আসনের সমর্থন দেখালে পরিস্থিতি আচমকাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।