সিরিয়ার আকাশসীমায় রুশ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দেশটির উপকূলীয় সীমান্ত বন্ধ করে দিচ্ছে রাশিয়া। তারা জানায়, নিরাপত্তা ও সামরিক অভিযানের স্বার্থে আগামী এক সপ্তাহ সিরিয়ায় সাইপ্রাস সীমান্তবর্তী এই চলাচল বন্ধ থাকবে। সাইপ্রাসের সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে এই দাবি করেছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেতজ।
ইসরায়েল এই দাবি অস্বীকার করে এক বিবৃতিতে জানায়, এই ঘটনার জন্য সিরিয়া, ইরান ও লেবাননের হিজবুল্লাহ বাহিনী দায়ী। দেশটির সেনাবাহিনী থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে সিরিয়াকে সম্পূর্ণরূপে দায়ী করা হয়। তারা জানায়, ইসরায়েলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে, তারা দেখেনি যে সীমানায় রুশ বিমান ছিল।
ইসরায়েলের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল গাদি আইজেনকোট বিধ্বস্ত রুশ বিমানের ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, ইসরায়েল তাদের রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করে যাবে।
হারেতজ জানায়, মঙ্গলবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন এ ঘটনায় ইসরায়েল দায়ী নয়। তিনি বলেন, ‘এটা আসলে ক্রমধারাবাহিক ঘটনা। ইসরায়েল তো আমাদের বিমান ভূপাতিত করেনি।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আভিগেদর লিবারম্যান বলেন, তিনিও পুতিনের সঙ্গে একমত। এটা একটি দুঃখজনক ভুল। তবে এই ভুলের দায় সিরিয়ার ওপর চাপিয়েছেন তিনি। লিবারম্যান বলেন, আসাদ বাহিনীই এর জন্য দায়ী।
সিরিয়ায় ২০১১ সাল থেকে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে তিন লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। সিরিয়ার চলমান সংকট নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বিপরীতধর্মী। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য তারা আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণাকারী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে এবং ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে। তবে আসাদ সরকারের দাবি, আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে যুক্তরাষ্ট্র মূলত বিদ্রোহীদের সহযোগিতা করতে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা চালাচ্ছে। আর রাশিয়া বাশার আল আসাদকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। আসাদ সরকারের সমর্থনে রাশিয়াও আইএস ও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে। সিরিয়া সংকটকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র প্রক্সি যুদ্ধে মেতে উঠেছে বলে অনেকেই মনে করেন।