লেবার পার্টি ক্ষমতায় যাওয়ামাত্রই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাজ্য: করবিন

ব্রিটিশ লেবার পার্টি ক্ষমতায় গেলে যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দলটির নেতা জেরেমি করবিন। বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে লিভারপুলে দলীয় সম্মেলনের শেষ দিনের বক্তব্যে তিনি বলেন, দ্বি রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধান একটি বাস্তবতা। এ কারণে তার দল ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই যত দ্রুত সম্ভব ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ এর প্রতিবেদন থেকে এ কথা জানা গেছে।

জেরেমি করবিন
১৯১৬ সালের ২ নভেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস আর্থার বেলফোর ইহুদি নেতা ব্যারন রথচাইল্ডকে চিঠি পাঠিয়ে ফিলিস্তিনের মাটিতে ইহুদিদের জন্য কথিত আবাসভূমি বা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা করেন। এই ঘোষণা বেলফোর ঘোষণা নামে পরিচিত। এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের নিজ ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে সেখানে ইহুদিবাদী ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১৭ সালে ২ অক্টোবর যুক্তরাজ্য ‘বেলফোর ঘোষণা’র শতবর্ষ উদযাপন করে। তবে লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন তখন ওই অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়ে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।

বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দলীয় সম্মেলনে করবিন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, 'লেবার পার্টি ক্ষমতায় গেলে যত দ্রুত সম্ভব ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে'। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনেরও নিন্দা জানিয়েছেন তিনি।  করবিন বলেন, ‘অব্যাহত দখলদারিত্ব, অবৈধ বসতির বিস্তার ও ফিলিস্তিনি শিশুদের কারারুদ্ধ করার ঘটনা অকথ্য নিষ্ঠুরতা।’

এর আগে মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) লেবার পার্টির বার্ষিক সম্মেলনে আলোচ্যসূচির শীর্ষ চারটি বিষয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রাধান্য পায় ফিলিস্তিন। হাউজিং,স্কুল ব্যবস্থা ও উইন্ডরাশ প্রজন্মের সুবিচার সংক্রান্ত প্রসঙ্গের পর ফিলিস্তিন নিয়ে আলোচনা করা হয়। ব্রেক্সিট ও জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চেয়েও বেশি সমর্থন পায় ফিলিস্তিন ইস্যু। দলের পক্ষ থেকে আনা এ সংক্রান্ত অভাবনীয় এক প্রস্তাবে বলা হয়, নাকবা’র সময় ‘বেশিরভাগ ফিলিস্তিনিকে তাদের বাড়ি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে’। প্রস্তাবে ‘ইতিহাসের বিকৃতি ও ১৯৪৮ সালের যুদ্ধে ভুক্তভোগীদের নিশ্চিহ্ন করে ফেলতে আগ্রাসী পদক্ষেপ’ নেওয়ারও নিন্দা জানানো হয়।
প্রস্তাবে বলা হয়,সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকালে নিহতদের মধ্যে সেবিকা, সাংবাদিক, নারী ও শিশু রয়েছে। আর আহতদের অর্ধেকই মারণাস্ত্রের আঘাতে জখম হয়েছেন। বিক্ষোভকারীদের ওপর ইসরায়েলের শক্তি ব্যবহারের বিষয়ে একটি স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত করার আহ্বান জানানো হয়। এতে ‘অবিলম্বে ও নিঃশর্তভাবে গাজা উপত্যকার ওপর থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়াসহ ‘ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাজ্য সরকারের অস্ত্র বিক্রি স্থগিত রাখা’র কথা বলা হয়।

বিতর্কের সময় সবাই যুক্তরাজ্যের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার ব্যাপারে রায় দেন। ৩০ মার্চ থেকে গাজায় ১৮০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যার ঘটনা তদন্তেরও আহ্বান জানান তারা।
তৃণমূল কর্মীদের নিরঙ্কুশ সমর্থনে লিভারপুলে দলের বার্ষিক সম্মেলনে প্রস্তাবটি পাস করা হয়।