শনিবার মালয়েশিয়ার উপনির্বাচন, প্রার্থী আনোয়ার ইব্রাহিম

শনিবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের পোর্ট ডিকসন আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের জোটসঙ্গী ও সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রীকে সংসদে নিতে এই আসন থেকে পদত্যাগ করেন ক্ষমতাসীন দলের এক সংসদ সদস্য। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নির্বাচনে জিতলে মালয়েশিয়ার রাজনীতির মূলধারায় আবারও ফিরতে পারবেন আনোয়ার। আর পরাজিত হলে নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা ও প্রধানমন্ত্রীত্বের দাবির প্রতি অনাস্থা দেখতে পাবেন তিনি।noname
এক সময়ের মিত্র আনোয়ার ইব্রাহিমকে উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য করেন মাহাথির মোহাম্মদ। সমকামীতার অভিযোগে কারাগারে পাঠান তাকে। অবশ্য পরে ক্ষমতায় নাজিব রাজাককে সরাতে গত মে মাসের নির্বাচনে আনোয়ারের জোটের নেতৃত্বে অংশ নিয়েছেন মাহাথির। ওই জোট গঠনের শর্তই ছিল মাহাথির প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে কারারুদ্ধ আনোয়ারকে মুক্তি দিয়ে দুই বছরের মধ্যে তার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

এই সপ্তাহের শুরুতে একসঙ্গে প্রচারণায় অংশ নেন আনোয়ার ইব্রাহিম ও মাহাথির মোহাম্মদ। ২০ বছরেরও বেশি সময় পর একসঙ্গে এই দুজন কোনও রাজনৈতিক সমাবেশে যোগ দিলেন। হাজার হাজার মানুষ ওই সমাবেশ যোগ দেয় বলে জানায় স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার। মাহাথিরকে উদ্ধৃত করে সংবাদপত্রটি লেখে, ‘আমার বিশ্বাস আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি। আনোয়ারের জন্য না, মাহাথিরের জন্য না, আমাদের প্রিয় দেশের জন্য আর সেইসব মালয়েশিয়র জন্য যারা আমাদের বিশ্বাস করে এই জাতি পুনর্গঠনের দায়িত্ব দিয়েছেন।’

বহুসংস্কৃতির দেশ মালয়েশিয়ায় ৩ কোটি মানুষের বাস। বেশিরভাগই মালয় মুসলিম। তবে আদিবাসী চীনা ও ভারতীয় ছাড়াও অনেক নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে দেশটিতে।

কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরের দক্ষিণের একটি ছোট শহরে এক সন্ধ্যায় হাজির হন আনোয়ার ইব্রাহিম। এক নির্বাচনি সমাবেশে সমবেতদের উদ্দেশ্যে মঞ্চে উঠে মালয় ভাষায় করা বক্তৃতায় তিনি মালয়েশিয়াবাসীর জন্য লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দেন।  বলছেন তারা কোথা থেকে এসেছেন তা বিবেচনায় নেবেন না তিনি। বলেন, আমরা সবাই একটি পরিবার। বন্ধ দোকানের সামনে সামিয়ানার নিচে সমবেত কয়েকশো মানুষ হাততালি দিয়ে সমর্থন দেন সাবেক এই উপপ্রধানমন্ত্রীকে।

কুয়ালালামপুরের গবেষণা প্রতিষ্ঠান কেআরএ গ্রুপের প্রধান কেইথ লিয়োং বলেন, যদি আনোয়ার জিতে যান তাহলে রাজনীতির মূলধারায় ফিরবেন তিনি। মাহাথিরের স্থলাভিষক্ত হতে এটা তাকে সাহায্য করবে কিন্তু যদি তিনি হেরে যান তাহলে নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা ও প্রধানমন্ত্রীত্ব নিয়ে তার দাবির প্রতি মানুষের অনাস্থা হিসেবে বিবেচিত হবে।

আনোয়ারকে নির্বাচনে আনতে পদত্যাগ করা পোর্ট ডিকসনের আগের সংসদ সদস্য গেত মে মাসের নির্বাচনে জিতেছিলেন ১৭ হাজার ৭১০ ভোটের ব্যবধানে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আনোয়ারের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণে আরও সুস্পষ্ট ব্যবধানে জিততে হবে তাকে। পেনাং ইনস্টিটিউটের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ওং চিং বলেন, ‘একটি বিশ্বাসযোগ্য বিজয় প্রয়োজন। তবে বিনা বাধায় ক্ষমতা পরিবর্তন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য তা যথেষ্টা নয়।’