খাশোগির ব্যাপারে জানার কথা অস্বীকার করেছেন সৌদি যুবরাজ: ট্রাম্প

নিখোঁজ সাংবাদিক জামাল খাশোগির সঙ্গে কী ঘটেছে তা জানার কথা অস্বীকার করেছেন সৌদি আরবের ক্ষমতাধর যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। যুবরাজের ফোন পাওয়ার পর এক টুইটার বার্তায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একথা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে বার্তা সংস্থা এপি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি সৌদি আরবকে দোষারোপ করার সমালোচনা করেছেন। তার মতে, সৌদি আরবকে দোষারোপ করা অনেকটা ‘নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত দোষী’ মতবাদের মতো। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও`র সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান

জামাল খাশোগি গত সপ্তাহে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিতে তুরস্কের ইস্তানবুল শহরের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর আর বের হননি। সৌদি আরব অবশ্য বলছে, খাশোগি কনস্যুলেট ভবন থেকে বের হয়ে গেছেন। তবে তুরস্কের পক্ষ থেকে এর প্রমাণ চাওয়া হলে তা সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে রিয়াদ। তুরস্কের দাবি, তাদের তদন্তকারীদের হাতে নিশ্চিত প্রমাণ রয়েছে কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে। গত সপ্তাহে তুরস্কে আসা ১৫ সদস্যের একটি সৌদি দল এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ আঙ্কারার। আর সৌদি যুবরাজের নির্দেশেই এই কাজ হয়েছে বলে ধারণা করছেন অনেকে। তবে বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন মোহাম্মদ বিল সালমান। ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার সময়ও তিনি তা অস্বীকার করেছেন।

ট্রাম্প এই টুইটার বার্তায় জানিয়েছেন, সৌদি যুবরাজ তাকে ফোন করে কথা বলেছেন। তিনি তাদের তুর্কি কনস্যুলেটে কী ঘটেছে তা জানার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন। ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি আমাকে বলেছেন, ইতোমধ্যে এই ঘটনার একটি পরিপূর্ণ তদন্ত শুরু করে দিয়েছেন ও এটা দ্রুত শেষ করা হবে। সব প্রশ্নের উত্তর শিগগিরই সামনে আসবে।’

সৌদি যুবরাজের ফোনালাপ ছাড়াও মিত্র দেশটির সংকটময় সময়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে সেখানে পাঠিয়েছেন ট্রাম্প। সোমবার সৌদি আরবকে দোষারোপ করা বাদ দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘দুর্বৃত্ত হত্যাকারীরা’ খাশোগির নিখোঁজের ঘটনায় দায়ী হতে পারে বলে সন্দেহ করেন ট্রাম্প।

তারপরও সৌদি আরবের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তর থেকে নিন্দা অব্যাহত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি সম্পর্কের সমর্থনকারী শীর্ষ রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহামও এই ঘটনায় সৌদি যুবরাজের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি মোহাম্মদ বিন সালমানকে ‘রেকিং বল’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, ‘লোকটি গোল্লায় গেছে।’

তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সৌদি আরব জামাল খাশোগির নিহত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করতে যাচ্ছে। সূত্রকে উদ্ধৃত করে আরেক মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস বলেছে, ’খাশোগি নিহতের’ ঘটনায় সৌদি আরব ব্যাখ্যা সাজিয়েছে। সৌদি আরবের নতুন ভাষ্য হবে, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান খাশোগিকে জিজ্ঞাসাবাদ বা আটক করে দেশে নিয়ে আসার বিষয়টি অনুমোদন করেছিলেন। কিন্তু গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তা করতে ব্যর্থ হন। একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ভুলবশত তাকে হত্যা করেন। পরে ওই কর্মকর্তা নিজেকে বাঁচানোর জন্য বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।