চাপের মুখে সৌদি আরব প্রশ্নে অবস্থান বদল ট্রাম্পের

খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে ইউরোপের সোচ্চার অবস্থানের ধারাবাহিকতায় সৌদি আরব প্রশ্নে নিজের পূর্ববর্তী অবস্থান থেকে খানিকটা সরে এসেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার ওই হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরবরাহকৃত সৌদি ব্যাখ্যাকে ‘গ্রহণযোগ্য’ দাবি করলেও শনিবার ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে শামিল হয়ে ট্রাম্প বলেন, ব্যাখ্যাই যথেষ্ট নয়। সত্য উন্মোচনের আগ পর্যন্ত তিনি সন্তুষ্ট নন। তবে এদিনও তিনি দাবি করেছেন, ঘটনার সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মুহম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতা নাও থাকতে পারে।

noname

খাশোগি হত্যাকাণ্ড প্রশ্নে সৌদি পাবলিক প্রসিকিউটর শনিবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন, স্বেচ্ছায় নির্বাসনে থাকা খাশোগিকে সৌদি আরবে ফিরিয়ে আনার জন্য সাধারণ নির্দেশনা জারি ছিল। যখন খবর আসে ২ অক্টোবর খাশোগি ইস্তানবুল কনস্যুলেটে যাবেন বিয়ের জন্য কিছু নথিপত্র নিতে, তখন জেনারেল আসিরি ১৫ সদস্যের একটি দল পাঠান এ ব্যাপারে তার সঙ্গে আলোচনা করতে। সৌদি কনস্যুলেটে দেখা করতে যাওয়া কয়েকজনের সঙ্গে খাশোগির লড়াই হয়। আর তাতেই খাশোগির মৃত্যু হয়। এই সৌদি ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয় ইউরোপীয় নেতারা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন দাবি তুলেছে ঘটনার যথাযথ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের। সরবরাহকৃত ব্যাখ্যাকে ‘অপর্যাপ্ত’ আখ্যা দিয়ে জার্মানি প্রশ্ন তুলেছে, এমন দেশের কাছে অস্ত্র বিক্রি যথাযথ কিনা। ফ্রান্স, কানাডা আর অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকেও সরবরাহকৃত সৌদি ব্যাখ্যা প্রত্যাখ্যান করে ঘটনার যথাযথ তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে।

শুক্রবার খাশোগির হত্যাকাণ্ডকে ‘সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য’ বললেও এ নিয়ে সৌদি আবরের পক্ষ থেকে হাজির করা ভাষ্যকে বিশ্বাসযোগ্য আখ্যা দিয়েছিলেন তিনি। সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি এটা একটা ভালো প্রথম পদক্ষেপ। এটা একটা বড় পদক্ষেপ। এর সঙ্গে অনেক অনেক মানুষ জড়িত আর আমার মনে হয়, এটা বিরাট পদক্ষেপ।’ তবে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের যথাযথ তদন্ত ও দোষীদের বিচারের দাবিতে ইউরোপীয় নেতাদের সোচ্চার হওয়ার ধারাবাহিকতায় শনিবার নাভাদা সফররত ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, ‘না, যতক্ষণ না এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হচ্ছে ততক্ষণ আমি সন্তুষ্ট নই। তবে এটা একটা উল্লেখযোগ্য প্রাথমিক পদক্ষেপ। একটা ভালো পদক্ষেপ। তবে খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে রহস্য উন্মোচন হওয়া জরুরি।

শুক্রবার সৌদি আরবকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাষ্ট্র আখ্যা দিয়ে খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রিয়াদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাবনা নাকচ করেন তিনি। শনিবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ নিষেধাজ্ঞা একটা পথ বটে, তবে অস্ত্র চুক্তি স্থগিত করলে তা তাদের চেয়ে আমাদের জন্য বেশি ক্ষতির কারণ হতে পারে।’ ঘটনার সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মুহম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতার কথা উচ্চারিত হচ্ছে জোরেশোরে। তবে তার এই ঘনিষ্ঠ পারিবারিক বন্ধুর প্রশ্নে শনিবারও ট্রাম্প বলেছেন, হত্যাকাণ্ডে তার সংশ্লিষ্টতা নাও থাকতে পারে।