তালেবান সংশ্লিষ্টতায় আট জনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

আফগানিস্তানের সশস্ত্র সংগঠন তালেবান সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আট জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন অর্থ দফতর।বৈশ্বিক সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত হিসেবে নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন ছয় তালেবান সদস্য ও ইরানের বিপ্লবী গার্ডের দুই সদস্য। মঙ্গলবার এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এছাড়া এসব সদস্যের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও উপসাগরীয় দেশগুলোর একটি জোট।ওয়াশিংটনে মার্কিন অর্থ দফতর
২০১৭ সালের মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৌদি আরব সফরের সময়ে প্রতিষ্ঠা করা হয় যুক্তরাষ্ট্র ও উপসাগরীয় দেশগুলোর জোট টেরোরিস্ট ফাইনান্সিং টার্গেটিং সেন্টার (টিএফটিসি)।সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অর্থায়ন বন্ধে সংস্থাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র সংস্থাটির দুই সহসভাপতি এবং বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত এর সদস্য। মধ্যপ্রাচ্য ও বিশেষ করে সিরিয়া এবং ইরাকে ইরানের শিয়া মতালম্বী প্রভাবের বিপরীতে সুন্নি মতালম্বী আরব বিশ্বের সঙ্গে নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক জোট গঠনে  ট্রাম্প প্রশাসনের লক্ষ্যের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা হয় টিএফটিসি। এই সংস্থাটিই যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি মঙ্গলবার তালেবান সদস্যদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

২০০১ সালে মার্কিন আগ্রাসনে ক্ষমতাচ্যুত হয় আফগানিস্তানের তালেবান সরকার।  দীর্ঘ ১৭ বছরের যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে সম্প্রতি কাতারে ওয়াশিংটন ও তালেবান প্রতিনিধিদের আলোচনায় আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে সম্মত হওয়ার খবর প্রকাশ পেয়েছে। আলোচনা অব্যাহত থাকলেও বিগত কয়েক মাসে আফগানিস্তানে মার্কিন সমর্থনপুষ্ট সরকারের ওপর হামলা জোরালো করেছে তালেবান।

মঙ্গলবার মার্কিন অর্থ দফতরের বিবৃতিতে বলা হয়, নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা তালেবান সদস্যদের দুইজন পাকিস্তানি ও চারজন আফগান নাগরিক। আফগানিস্তানে আত্মঘাতী ও অন্যান্য প্রাণঘাতী হামলার জন্য দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এছাড়া তালেবান সদস্যদের অর্থনৈতিক ও সরঞ্জাম সহায়তার অভিযোগে ইরানের কুদস বাহিনীর ইবরাহিম ওহাদি ও ইসমাই’লস রাজাভি নামের দুই সদস্যকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আমেরিকার সীমানায় থাকা এসব ব্যক্তিদের সম্পত্তি বা লাভজনক সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে পারবে।

চলতি বছরের মে মাসে তেহরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তির কারণে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার বিনিময়ে তাদের ওপর আরোপিত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, ওই চুক্তিতে ইরানের ব্যালেস্টিক মিসাইল কর্মসূচি, ২০২৫ সালের পর পারমাণবিক কার্যক্রম এবং আঞ্চলিক সংঘাতে ভূমিকাকে যুক্ত করা হয়নি। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সৌদি আরব বলছে, এই অঞ্চলের সশস্ত্র যোদ্ধাদের প্রতি ইরানের সমর্থন ও বিপ্লবী গার্ডের পরিচালিত ব্যালেস্টিক মিসাইল কর্মসূচিকে শনাক্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করবে রিয়াদ।