‘ব্রেক্সিট চুক্তি না হলে যুক্তরাজ্যের সেবা খাতে ব্যয় কমবে’

ব্রেক্সিট চুক্তির ওপর নির্ভর করে ব্যয় পরিকল্পনা করবেন বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামোন্ড। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, চুক্তি না হলে সেবা খাতে ব্যয় বাড়ানোর পরিকল্পনা বাদ দেওয়া হবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামোন্ড

২০১৯ সালে ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু এর মধ্যে ব্রেক্সিট চুক্তি চূড়ান্ত করা নিয়ে কয়েকবারই হোঁচট খেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ব্রেক্সিট চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়ে দ্বিমতকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে পদত্যাগ করেন ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস। তার পরপর ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন প্রস্তাবের শর্তের সঙ্গে একমত হতে না পেরে পদত্যাগ করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন। তার ওপর গত শনিবার ব্রেক্সিট বাতিলের দাবিতে দ্বিতীয় গণভোট চেয়ে যুক্তরাজ্যে সমাবেশ করেছন প্রায় সাত লাখ মানুষ। তবে গত ২২ অক্টোবর হাউস অব কমেন্সে নিজের বক্তৃতায় থে দাবি করেছেন, ‘সবকিছু মিলিয়ে ৯৫ শতাংশ বিষয়ে ব্রেক্সিট চুক্তি চূড়ান্ত হয়ে গেছে।’

সোমবার (২৯ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যের বার্ষিক বাজেট ঘোষণা করবেন হ্যামোন্ড। তার আগে রবিবার টেলিভিশন চ্যানেল স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আগামী পাঁচ মাসের মধ্যে যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে আসতে পারলে সরকার ভোটারদের দেখাতে পারবে যে, তাদের কঠোর পরিশ্রমের মূল্য দেওয়া হয়।’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রাখার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে কনজারভেটিভ পার্টির অনেক আইনপ্রণেতার তোপের মুখে পড়েছেন হ্যামোন্ড। তিনি বলেন, ‘যদি আমরা একটি চুক্তি করতে না পারি, তাহলে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির ভবিষ্যতকে আমাদের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ভিন্ন কৌশলের খোঁজ করতে হবে আর সত্যি বলতে আমাদের নতুন বাজেট দিতে হবে। ওই বাজেটে ভবিষ্যতের জন্য আলাদা কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।’

১০ বছর আগের অর্থনৈতিক সংকটের পর থেকে যুক্তরাজ্য তাদের বাজেটের ব্যয় ব্যাপক হারে কমিয়েছে। তবে ঋণের পরিমাণ এখনও একই রয়ে গেছে। বেশিরভাগ অর্থনীতিবিদ বলছেন, কোনও চুক্তি ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে গেলে যুক্তরাজ্যকে অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়তে হবে।

হ্যামোন্ড বলেন, যুক্তরাজ্য আলোচনার মাধ্যমে একটি ব্রেক্সিট চুক্তি করতে পারবে সে ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। আর এই চুক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতিও কমাতে পারবে। কিন্তু যদি কোনও চুক্তি না হয় তাহলে সরকার ও ব্যাংক অব ইংল্যান্ডকে পরিস্থিতি বুঝে পদক্ষেপ নিতে হবে।