দুই ব্রিটিশ-বাংলাদেশির নাগরিকত্ব পুনর্বহালের নির্দেশ যুক্তরাজ্যের আদালতের

দুই ব্রিটিশ-বাংলাদেশির জাতীয়তার অধিকার পুনর্বহালে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন লন্ডনের একটি আদালত। শুক্রবার বিশেষ অভিবাসন আপিল কমিশনের (এসআইএসি) বিচারকরা এ রায় দেন। রায়ে বলা হয়েছে, ব্রিটেনের সিদ্ধান্তের কারণে ওই দুজন রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ই৩ ও এন৩ নামে চিহ্নিত ওই দুই ব্যক্তির বিষয়ে রায়ে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ সরকার তাদের ভুলভাবে শনাক্ত করেছে।

nonameইতোপূর্বে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে ওই দুইজনের নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়েছিল ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ।

মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সংবাদমাধ্যম মিডলইস্ট আই জানিয়েছে, ই৩ ও এন৩ দুজনেরই পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড বাংলাদেশের। একজনের জন্ম বাংলাদেশে, অন্যজনের জন্ম যুক্তরাজ্যে। দুজনই এক সময় বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দ্বৈত নাগরিক ছিলেন। কিন্তু আদালতের রায়ে বলা হয়েছে ২১ বছর বয়সে দুজনই বাংলাদেশের নাগরিকত্ব হারান। তা ফিরে পেতে কখনও তারা কোনও উদ্যোগ নেননি।

সম্প্রতি বছরগুলোতে সিরিয়া ফেরত সন্দেহভাজন যোদ্ধা হওয়ার আশঙ্কায় ব্রিটিশ সরকার দেশটির অনেক মানুষকেই নাগরিকত্ব বঞ্চিত করেছে। এসআইএসি আদালত এসব নাগরিকের অনেকের ক্ষেত্রেই ইতিবাচক রায় দিয়েছে।

এন৩ নামে চিহ্নিত ওই ব্যক্তি বলেছেন, এই মামলার কারণে এক বছরের বেশি সময় ধরে তুরস্কে থাকতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। তুরস্কে তিনি সিরিয়া থেকে আসা শরণার্থীদের সহায়তায় ত্রাণ কার্যক্রম চালান। ই৩’র মামলায় সিরিয়া সংশ্লিষ্টতার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

আদালতের রায় প্রকাশের পর এন৩ নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তিনি বলেন, গত বছর তুরস্কে ব্যবসা সংক্রান্ত ও জরুরি ত্রাণকাজের জন্য যুক্তরাজ্য ছাড়ার পর নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়ে নিজ দেশ আমার পিঠে ছুরি মেরেছিল। আশা করছি, এখন আদালত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া বন্ধ করতে বাধ্য করবে।

ওই দুই ব্যক্তির নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার সময় যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্ট ও জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যু’কে সামনে এনেছিল। তবে শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ধরণের আদেশ দিতে পারে। এতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও অপরাধ গঠন ও দণ্ড ঘোষণার দরকার পড়ে না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যদি মনে করে যুক্তরাজ্যে এসব ব্যক্তির উপস্থিতি জনগণের জন্য মঙ্গলজনক নয় তাহলে তাদের বহিষ্কার করতে পারে।