তামিল নাড়ুতে ঘূর্ণিঝড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩২

ভারতের তামিল নাড়ু উপকূলে শুক্রবার ভোরে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় গাজার তাণ্ডবে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন উপদ্রুত এলাকার অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাজ্যজুড়ে হাই অ্যালার্ট জারি রয়েছে। নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ৭৬ হাজার মানুষকে। শুক্রবার বিভিন্ন স্কুল-কলেজে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল।

nonameবিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়ছে। ঝড় ও প্রবল বর্ষণের কারণে অনেক জায়গায় ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। ঝড়ের তাণ্ডবে হাজার হাজার গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অনেক এলাকা। জেলেদের সাগরে না যাওয়ার সংকেত দেওয়া হয়েছে।

তামিল নাড়ুর নাগাপট্টিনম, তিরুভারুর এবং তাঞ্জাভুরে শুক্রবার ভোরে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় গাজা। ওই সমস্ত এলাকা আগেই ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছিল। দুর্ঘটনা এড়াতে প্রায় ৭৬ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।

আবহাওয়া দফতর সূত্র বলছে, তামিলনাড়ুর ৬ জেলায় বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে শুরু হয় তুমুল বৃষ্টি। সঙ্গে প্রবল ঝড়ো হাওয়া। রাত সোয়া ৩টা নাগাদ আবহাওয়া দফতর জানায়, তামিল নাড়ুতে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় গাজা। আছড়ে পড়ার সময় এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১২০ কিলোমিটার। নাগাপট্টিনমে ৫০০০ এবং তিরুভারুরে ৪০০০ এবং তাঞ্জাভুরে ৩০০০টি বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে। ‌এসব এলাকা বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে প্রচুর বড় গাছপালাও।

পরিস্থিতি সামাল দিতে উপকূলবর্তী এলাকায় জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট। ১২ নভেম্বর থেকেই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। তা বহাল রাখা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় আছড়ে  পড়ার পরও যাতে  মোবাইল পরিষেবা ব্যহত না হয় তার জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে  জেলা  প্রশাসন।  নৌবাহিনীর দুটি জাহাজকে উপদ্রুত এলাকায় নিয়ে  যাওয়া  হয়েছে। হেলিকপ্টার থেকে  শুরু করে অন্য সমস্ত ব্যবস্থা  ঠিক করে রাখা আছে। চেন্নাই  থেকে নাগাপাট্টিনাম, ত্রিভুর এবং থানজুভুরের দিকে যাওয়া চারটি ট্রেনের শিডিউল বাতিল করা হয়েছে।  চারটি এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাপথও  বদল করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে প্রাণহানির ঘটনায় সমবেদনা জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে তামিল নাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পালানিস্বামীর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। এ সময় কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সহায়তায় সম্ভব সবকিছু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শন করে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পালানিস্বামী। আহতদেরও ২৫ হাজার রুপি করে দেবে রাজ্য সরকার। সূত্র: স্ক্রল, লাইভ মিন্ট, এনডিটিভি।