বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা মার্কিন ন্যাশনাল গার্ড ব্যুরোর

প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর অর্জনের প্রশংসা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল গার্ড ব্যুরোর সহকারী প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ড্যানিয়েল আর হাকানসন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের সামরিক নেতৃত্ব এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে সেনাবাহিনীর বিস্তৃত অংশীদারিত্ব ও শান্তি সহায়তা উদ্যোগ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে প্রশংসিত হয়েছে। মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়।

DSC_0836

মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে বাংলাদেশে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে ৪৭তম সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন হাকানসন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে নিয়োজিত বাংলাদেশের সেনা ও পুলিশ বাহিনীর ৭ হাজার সদস্য নিরাপত্তা দিয়ে আসছে। একই সঙ্গে এসব এলাকায় তারা চিকিৎসা সহায়তা ও প্রকৌশল সহযোগিতাও দিচ্ছে।’

জেনারেল হাকাসন বলেন, ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশে যে অভূতপূর্ব মানবিক তৎপরতা দেখিয়েছে সেজন্য বাংলাদেশের অনেক প্রশংসার দাবিদার।

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সহযোগিতা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে জেনারেল হাকাসন ২০০৮ সাল থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশে সেনাবাহিনী ও মার্কিন ন্যাশনাল গার্ডের মধ্যকার সম্পর্কের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘একসঙ্গে কাজ করা, একে-অপরের কাছ থেকে শেখা ও সম্পদের বিনিময়ের মাধ্যমে দুই বাহিনীই একত্রে ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা পরিবেশে আরও বেশি শক্তিশালী হয়েছে।’ হাকানসন বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা সহযোগিতা দুই দেশের মানুষের মধ্যেও বোঝাপড়া ও বন্ধুত্বকে আরও গভীর করেছে।’

অনুষ্ঠানের শুরুতে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ড্যানিয়েল আর হাকানসনকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়

জেনারেল হাকানসন শুধুমাত্র জাতীয় নিরাপত্তা নয়, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তায়ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিশাল অবদানের কথা তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে আর্মি রিজার্ভের সহকারী প্রধান মেজর জেনারেল এ সি রোপার। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও প্রতিরক্ষার দায়িত্বে থাকা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মইনুল হাসান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, মার্কিন সামরিক সদর দফতর পেন্টাগন, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর ও অন্যান্য সংগঠনের  জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত নাগরিক ও দূতাবাসে কর্মকর্তারা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশ তার সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ে গর্ব করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদের অমূল্য আত্মত্যাগ ও অবদান রয়েছে। এছাড়া প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগের সময় তারা মানব সেবার এক অনুপ্রেরণার নাম।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা দমন করছে। এছাড়া চোরাচালান এবং মানব ও মাদক পাচাররোধেও তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।’

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, মার্কিন সরকার বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীকে কারিগরি সহায়তা দেওয়ায় ও শান্তিরক্ষী মিশনে কর্মরত বাংলাদেশি সদস্যদের বিশ্বের বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ দেওয়ায় মার্কিন সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত।