‘দাস আইন’-এর প্রতিবাদ ও প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবার্নের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে হাঙ্গেরির রাজপথে নেমেছেন কয়েক হাজার মানুষ। শনিবার রাজধানী বুদাপেস্টের রাস্তায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন তারা। বিক্ষোভকারীরা হাঙ্গেরিতে বছরে ৪০০ ঘণ্টা ওভারটাইমের সুযোগ রেখে পাস হওয়া আইনকে ‘দাস আইন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। আওয়াজ তোলেন এ আইন বাতিলের দাবিতে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
কোনও কোনও ব্যানারে আহ্বান জানানো হয়, দেশজুড়ে যেন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়।
ইভা ডেমেটার নামের একজন বিক্ষোভকারী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ২০১০ সালে এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতি থেকে শুরু করে ছদ্ম গণতন্ত্র পর্যন্ত যা যা হচ্ছে তার প্রায় সবকিছুর সঙ্গেই আমরা একমত নই।
৫০ বছরের এই গৃহকর্মী বলেন, নতুন করে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ রাস্তায় নামবেন। কেননা, এ দাস আইনে বিপুল সংখ্যক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
ডিসেম্বরে হাঙ্গেরির পার্লামেন্টে আইনটি পাস হওয়ার পর থেকেই এ আইন নিয়ে নিজেদের ক্ষোভের জানান দিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। ডিসেম্বরে দাস আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীরা দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল এমটিভিএ’র সদর দফতরের সামনে পৌঁছে যায়। এক পর্যায়ে তারা ভবনটিতে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে তাদের লক্ষ্য করে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ।
আগের আইনে একজন মালিক বছরে শ্রমিকদের ২৫০ ঘণ্টা ওভারটাইম করাতে পারতেন। কিন্তু নতুন আইনে ৪০০ ঘণ্টা ওভারটাইমের সুযোগ রাখা হয়েছে।
পার্লামেন্টে এই আইনের প্রস্তাব করে উগ্র জাতীয়তাবাদী প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের ফিডেজ পার্টি। সরকারের দাবি, কর্মঘণ্টায় এই স্বেচ্ছামূলক পরিবর্তন শ্রমিকদের স্বার্থেই করা হয়েছে। এতে করে মানুষ বেশি কাজ ও বেশি আয় করতে পারবে। কিন্তু সরকারের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে বিক্ষোভকারীরা।
সরকারের পক্ষ থেকে নতুন আইনের স্বপক্ষে কর্মী সংকটের কথা তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু সরকারি হিসাবে, হাঙ্গেরিতে বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।
বুদাপেস্ট থেকে আল জাজিরা’র মিরনা ব্রেকালো জানান, আন্দোলনকারীদের দাবির পরিমাণ আরও বেড়েছে। তারা প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবার্নের অপসারণ চায়।