ট্রাম্প-এরদোয়ান ফোনালাপে সিরিয়ায় নিরাপদ অঞ্চল স্থাপনে সম্মতি

সিরিয়ায় কুর্দিপন্থী সংগঠন ওয়াইপিজির ভবিষ্যৎ প্রশ্নে তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা কমার ইঙ্গিত মিলেছে। সোমবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে ‘ঐতিহাসিক বোঝাপাড়া’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। মঙ্গলবার সহযোগীদের তিনি বলেছেন, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে সীমান্তের ২০ মাইল এলাকায় নিরাপদ অঞ্চল স্থাপনের পরামর্শ দিয়েছেন ট্রাম্প। এই পরিকল্পনাকে ইতিবাচক বলে মত দিয়ে পরে আরও পরিধি বাড়ানো যাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এর আগে এক টুইট বার্তায় সিরিয়ার সীমান্ত এলাকায় ‘সেফ জোন’ স্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানান ট্রাম্প করেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পমধ্যপ্রাচ্যে আইএস বিরোধী লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ওয়াইপিজি। এই সংগঠনটিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে তুরস্ক। কুর্দিশ পিপলস প্রটেকশন ইউনিট (ওয়াইপিজি) ও তার রাজনৈতিক শাখা কুর্দি ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন পার্টি (পিওয়াইডি)-কে সন্ত্রাসী সংগঠন বিবেচনা করে থাকে আঙ্কারা। তুরস্কে নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কাস পার্টির (পিকেকে) সঙ্গে তাদের সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করে আঙ্কারা। বহুদিন ধরেই ওয়াইপিজির বিরুদ্ধে সামরিক হামলার হুমকি দিয়ে আসছে তুরস্ক। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠীটির সম্পর্কেরও নিন্দা জানিয়ে আসছে তারা।  সোমবার এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প আঙ্কারাকে হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, কুর্দিদের ওপর আক্রমণ চালানো হলে তুরস্কের অর্থনীতি ধ্বংস করে দেবে যুক্তরাষ্ট্র।

মঙ্গলবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, সোমবার রাতে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে তার ঐতিহাসিক বোঝাপড়া হয়েছে। তবে সেই বোঝাপড়া বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেননি তিনি। এরদোয়ান বলেন, ট্রাম্পের টুইটে দুঃখ পেলেও পরের ফোনকলটি ছিল ইতিবাচক। তিনি বলেন, ‘মিত্রতার মূল্যবোধে এই ইস্যু তুরস্ক ততক্ষণ সমাধানের চেষ্টা করবে যতক্ষণ আমাদের অধিকার ও আইনকে শ্রদ্ধা দেখানো হবে।’

তুরস্কে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সী জানিয়েছে, দুই নেতার ফোনালাপে মার্কিন সেনাপ্রত্যাহারের পর নেতৃত্ব সংকটে সিরিয়ার সীমান্ত শহর মানবিজের পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ওয়াইপিজি যোদ্ধাদের সরিয়ে ওই অঞ্চলকে স্থিতিশীল করতে এক চুক্তির অংশ হিসেবে গত ১ নভেম্বর মানবিজে যৌথ টহল শুরু করে তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা।

গত মাসে ট্রাম্প সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলে ওয়াশিংটনসহ পশ্চিমা দেশের অনেক রাজনীতিবিদই অবাক হয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে আশা করা হচ্ছিল এই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন হবে তবে কয়েক সপ্তাহ পর সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা এখন অস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও কুর্দি যোদ্ধাদের নিরাপত্তাকে পূর্বশর্ত নির্ধারণ করেছে তারা।