খাশোগি হত্যাকাণ্ডের আন্তর্জাতিক তদন্ত চালাতে প্রস্তুত তুরস্ক

ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে নৃশংসভাবে খুন হওয়া সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক তদন্ত চালাতে প্রস্তুত রয়েছে তুরস্ক। ইতোমধ্যেই এর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু। তিনি অভিযোগ করে বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো এই হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

জামাল খাশোগিইস্তানবুলে এক যুব সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডকে লোকচক্ষুর অন্তরালে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা সম্পর্কে আঙ্কারা ভালোভাবে অবগত রয়েছে।

তিনি বলেন, কিছু পশ্চিমা দেশ এই ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে চায়। আমরা এর কারণ জানি। আমরা দেখেছি কীভাবে গোপন চুক্তি ও লেনদেনের মাধ্যমে খাশোগি হত্যাকাণ্ডকে বিশ্বজনমতের দৃষ্টি থেকে আড়াল করা হয়েছে।

মেভলুত কাভুসোগলু বলেন, যারা বাক ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বুলি আওড়ায় তারাই খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে অর্থের সামনে চুপ হয়ে গেলো। কিন্তু তুরস্ক বিষয়টিকে সহজে ছাড়বে না এবং এ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক তদন্ত চালাবে।

এর আগে এ মাসের গোড়ার দিকে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের যে বিচার চলছে তার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে এই বিচার ‘যথেষ্ট নয়’ বলে মনে করে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশন-এর মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি শুক্রবার বলেছেন, তার সংস্থা খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মহলের সংশ্লিষ্টতায় একটি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছে। একইসঙ্গে তিনি অভিযুক্তদের জন্য মৃত্যুদণ্ডের আবেদনের বিরোধিতা করেন।

২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সাংবাদিক জামাল খাশোগি। খুনের নির্দেশদাতা হিসেবে আঙ্গুল উঠে খোদ সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে প্রথমে এ হত্যাকাণ্ডের খবর অস্বীকার করা হয়। পরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্বীকার করলেও এর সঙ্গে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সম্পৃক্ততার খবর অস্বীকার করা হয়। ওই ঘটনায় দুনিয়াজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েন এমবিএস নামে পরিচিত সৌদি যুবরাজ। বর্তমানে ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে একদল সৌদি নিরাপত্তা কর্মীর বিচার চলছে। তুরস্কের মাটিতে খাশোগি খুন হয়েছেন বলে তুর্কি কর্মকর্তারা ঘাতক বাহিনীর সদস্যদের বিচারের জন্য আঙ্কারার হাতে সোপর্দ করার আহ্বান জানালেও সৌদি আরবের পক্ষ থেকে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। সূত্র: আল জাজিরা।