সিরিয়ায় সেফ জোন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনও সন্তোষজনক পরিকল্পনা নেই

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, সিরিয়ায় সেফ জোন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত তার দেশের কোনও সন্তোষজনক পরিকল্পনা নেই। মঙ্গলবার তুরস্কের ক্ষমতাসীন দল একে পার্টির এক পার্লামেন্টারি বৈঠকে এমন মন্তব্য করেন তিনি। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে এ সেফ জোন প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী আঙ্কারা। তিন সপ্তাহ আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও আঙ্কারার এমন আগ্রহে সায় দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে যুক্তরাষ্ট্রের তরফে আর আগ্রহ দেখা যায়নি।

রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেন, অবশ্যই আমরা আস্থাশীল। আমাদের কাছে অঙ্গীকার মানে অঙ্গীকার। কিন্তু আমাদের ধৈর্য সীমাহীন নয়।

ইতোপূর্বে সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে দেশটির উত্তরাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি বিদ্রোহীদের জন্য একটি সেফ জোন তৈরির কথা বলেছিলেন ট্রাম্প।

এর আগে অঞ্চলটিতে সামরিক অভিযান চালানোর প্রস্তুতির কথা বললেও ট্রাম্পের ঘোষণার পর সেফ জোন তৈরিতে সম্মত হয় আঙ্কারা। জানুয়ারিতে ট্রাম্পের সঙ্গে এক ফোন কলেও বিষয়টি নিয়ে একমত পোষণ করেন এরদোয়ান। সিরিয়ার তুরস্ক সীমান্তবর্তী ৩২ কিলোমিটার এলাকায় সেফ জোন তৈরির প্রস্তাব দেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট। তবে তিনি বলেন, এই সেফ জোনে মার্কিন মদদপুষ্ট কুর্দি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ওয়াইপিজি’র কোনও ঠাঁই হবে না।

এদিকে সেফ জোন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ আশাব্যঞ্জকভাবে অগ্রসর না হলেও ইতোমধ্যেই সিরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ প্রক্রিয়া নিরাপদ করতে দেশটিতে নতুন করে আরও অর্ধসহস্রাধিক সেনাসদস্য পাঠিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানিয়েছে, এসব সেনারা সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় অবস্থিত মার্কিন বিমান ঘাঁটিতে অবতরণ করেছে।

নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের ফলে নিরাপদ সেনা প্রত্যাহার নিশ্চিতে সিরিয়ায় ঠিক কতজন বাড়তি সেনাসদস্য পাঠানো হয়েছে তা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের একজন কর্মকর্তা।

২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর ট্রাম্প ঘোষণা দেন সিরিয়া থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের। ২০১৬ সালে আইএসের কাছ থেকে মানবিজ দখল করে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ)। এই জোটে রয়েছে মার্কিন সমর্থিত কুর্দিশ ওয়াইপিজি। তুরস্ক ওয়াইপিজিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) শাখা সংগঠন মনে করে। পিকেকে কয়েক দশক ধরে স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে।