ইলিশ পেতে ৪০ বছর পর ফারাক্কা বাঁধে সংস্কার আনলো ভারত

প্রজনন মওসুমে ইলিশের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত রাখতে ফারাক্কা বাঁধের নেভিগেশন লকটির নকশায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এমনভাবে নকশা সংস্কার করা হয়েছে যাতে করে বাঁধ দিয়ে ইলিশ প্রবেশ করতে পারে। ফলে চার দশক পর আসন্ন বর্ষাকালে ভারতে ইলিশ পাওয়ার নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এখবর জানিয়েছে।noname
সত্তর দশকে পশ্চিমবঙ্গে গঙ্গা নদীতে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের আগে উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদ পর্যন্ত ইলিশ পেত ভারতের জেলেরা। নৌযানের চলাচল নিশ্চিত করতে ফারাক্কা বাঁধে নির্মাণ করা নেভিগেশন লকের কারণে বাধাগ্রস্থ হয়ে পড়ে ইলিশের স্বাভাবিক চলাচল। ভারতে কম ধরা পড়তে শুরু করে সুস্বাদু এই মাছটি।

নোনা পানির মাছ ইলিশ বর্ষা মওসুমে প্রজননের জন্য বঙ্গোপসাগর থেকে মিঠাপানির নদীতে চলে আসে। বাংলাদেশের বিভিন্ন নদী ধরে এই মাছটির ভারতের গঙ্গা নদী দিয়ে এলাহাবাদ পর্যন্ত পৌঁছানোর নজিরও রয়েছে। মূলত বাংলাদেশেই পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ইলিশ পাওয়া যায়। অতিরিক্ত আহরণ ও জাটকা ইলিশ ধরার কারণে এক সময়ে পরিমাণ কমে আসলেও গত কয়েক বছরে জাটকা রক্ষায় সফলতা আসায় বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। তবে ফারাক্কা বাঁধের কারণে ভারতে পর্যাপ্ত ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণেই বাঁধটির নেভিগেশন লকে সংস্কার আনলো ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

ভারতের অভ্যন্তরীণ নৌপথ কর্তৃপক্ষের ভাইস চেয়ারম্যান প্রবীর পান্ডে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, ‘আমরা ইলিশের চলাচলের পছন্দের সময় রাত একটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত ফারাক্কা বাঁধের গেটটি আট মিটার পর্যন্ত খুলে রাখবো। অভ্যন্তরীণ মৎস গবেষণা ইনস্টিটিউট, কেন্দ্রীয় পানি কমিশন এবং ফারাক্কা বাঁধ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে’।

ভারতের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘খাবার খুঁজতে আর ডিম ছাড়ার সময়ে প্রায়ই মাছেরা বিশাল এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ইলিশের চলাচল নিশ্চিত হলে এই অঞ্চলে মাছটির উৎপাদন বাড়বে। এছাড়া এর ফলে নদীর জীববৈচিত্র্য বাড়ার পাশাপাশি স্থানীয় জেলেদের অর্থনীতিকে বেগবান করবে’।