রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে অঞ্চলকে স্থিতিশীল রেখেছে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ শুধু তাদের জীবনই বাঁচায়নি, গোটা অঞ্চলকেও স্থিতিশীল রেখেছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনসহ তাদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করাটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত দায়িত্বের মধ্যে পড়ে বলে দাবি করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জেনেভায় ওআইসি’র রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদের এক সম্মেলনে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। এদিন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষযক হাই কমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন তিনি। শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব কথা জানা গেছে।

মিশেল ব্যাচেলেটের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকয়েক প্রজন্ম ধরে রাখাইনে বসবাস করে আসলেও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব স্বীকার করে না মিয়ানমার। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। খুন,ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা। জাতিসংঘ মিয়ানমারে সংঘটিত রোহিঙ্গাবিরোধী নৃশংসতাকে গণহত্যা আখ্যা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আর বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা স্যাটেলাইট ইমেজ আর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মধ্য দিয়ে হত্যা-ধর্ষণ-ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের আলামত তুলে আনলেও মিয়ানমার ওই অভিযোগকে ‘অতিকথন’ কিংবা ‘গুজব’ আখ্যায়িত করে তা নাকচ করে আসছে।

জাতিসংঘের ‘যৌথভাবে রোহিঙ্গা মানবিক সংকট মোকাবিলা পরিকল্পনা ২০১৯’ প্রকাশের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) জেনেভায় গেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘে পরিকল্পনাটি উপস্থাপন করা হবে। জাতিসংঘের পরিকল্পনাটি উপস্থাপনের একদিন আগে বৃহস্পতিবার ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন শাহরিয়ার আলম। নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে মিয়ানমারে সহায়ক পরিবেশ তৈরির জন্য ওআইসি সদস্যদের কাছ থেকে সমর্থন চেয়েছেন তিনি। ওআইসিভুক্ত তুরস্ক, সৌদি আরব, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, লেবানন, জর্ডান, লিবিয়া, ফিলিস্তিন ও মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিরা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হওয়া রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন তারা।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষযক হাই কমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। সেসময় তারা রোহিঙ্গা পরিস্থিতির সাম্প্রতিক চিত্র নিয়ে আলোচনা করেছেন।